এক সাথে কিছুদিনের বাজার করে এনে শাকসবজি গুলো একটু যত্ন নিয়ে নিয়মমাফিক ফ্রিজে তুললে সতেজ রাখা সম্ভব । তাই ফ্রিজে সবজী রাখার আগে এই বিষয় গুলো মনে রাখতে হবে কোনো সবজির কোনো অংশ পচে গিয়ে থাকলে তা কেটে বাদ দিতে হবে আপনাকে । ফ্রিজের ছোট ছোট ছিদ্রযুক্ত আলাদা ড্রয়ারে রেখে শাকসবজি সংরক্ষণ করতে হবে। শাকসবজি গুলো ফ্রিজে রাখার সময় যেনে একটি সবজী অন্য সবজী সাথে খুব চাপাচাপি করে সেগুলো না রেখে একটু ফাঁকাভাবে রাখতে । এ ছাড়া সবজির জন্য যে বিশেষ ধরনের জিপার ব্যাগ কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করলে সবজি সতেজ রাখতে পারবেন।
হরেক রকম সবজি
পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, বরবটি, গাজর, শসা প্রভৃতি বাজার থেকে এনে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে পানি ঝরিয়ে ফেলুন। এবার একটা পরিষ্কার, বড়, পাতলা কাপড়ে (মার্কিন কাপড় কিংবা পাতলা তোয়ালেও হতে পারে) সবজিগুলো রেখে অন্য একটা পাতলা তোয়ালে দিয়ে সেগুলো একটি একটি করে মুছে সেই বিশেষ ব্যাগে পুরে ফ্রিজে রাখুন। এক এক সবজি রাখুন এক এক ব্যাগে। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র চালানো হলে ঘণ্টাখানেকের ভেতরেই সবজিগুলো বেশ খানিকটা শুকিয়ে আসে, তাতে শুকিয়ে নেওয়ার ঝক্কিটা অনেকাংশে কমে যায় (ঘণ্টাখানেক পর সবজিগুলো মুছতে সময়টা কম লাগে)। তবে ফ্যানের বাতাসে কিন্তু শাকসবজি নেতিয়ে যায়। ব্যাগটা হতে পারে নেটের কিংবা পাতলা কাপড়ের (চাইলে নিজেরা পাতলা কাপড় দিয়ে ফিতাসহ এ ধরনের ব্যাগ তৈরি করে নিতে পারেন)। পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার না করাই ভালো, করলেও তা ছিদ্র করে নিতে হবে বাতাস চলাচলের জন্য কিংবা মুখ একটু খুলে রাখতে হবে। ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে পারলে সবজিগুলো ছয়-সাত দিন সতেজ থাকে।
ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, টমেটো
এগুলো আনার পর ডাঁটা ফেলে প্রয়োজনমতো টুকরা করে ফেলুন। এবার এক গামলা কুসুম গরম পানিতে এক চা-চামচ লবণ ও এক চা-চামচ ভিনেগার দিয়ে টুকরাগুলো রাখুন ১০ মিনিট। এরপর কলের পানিতে বেশ অনেকটা সময় ধরে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর বাকি সবজিগুলোর মতোই পানি শুকিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। ৭-৮ দিন সতেজ থাকে। টমেটোর জন্যই একই পদ্ধতি, পার্থক্য একটাই, টমেটো গোটা অবস্থায় সংরক্ষণ করতে হবে। টমেটো ১৫-১৬ দিন ভালো থাকে।
ক্যাপসিকাম
ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। শুকিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি একই। তবে ফ্রিজে রাখুন সেলোফিন কাগজে ভালোভাবে পেঁচিয়ে (একটি কাগজে কেবল একটিই রাখুন)। ২৫-৩০ দিন ভালো থাকে।
শাক
পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে টুকরা করে পাতলা কাপড়ে বিছিয়ে রাখুন। হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দিন মাঝে মাঝে। পানি শুকিয়ে গেলে একই ধরনের ব্যাগে করে ফ্রিজে রেখে দিন। ২-৪ দিন ভালো থাকে।
লাউ-কুমড়া
ফালি করে করে আলাদা আলাদা সেলোফিন কাগজে ভালোভাবে পেঁচিয়ে ফ্রিজে রাখুন (ফ্রিজে রাখার আগে পানির সংস্পর্শ বর্জনীয়)। ৫-৬ দিন সতেজ থাকে।
শাক ছাড়া অন্য পাতা এবং কাঁচামরিচ
ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, পার্সলি প্রভৃতির যে অংশটুকু কাজে লাগবে, সেটুকু আলাদা করে নিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ছড়িয়ে রাখুন কিচেন টাওয়েল বা টিস্যু পেপারের ওপর। শুকিয়ে এলে নতুন, শুকনা কিচেন টাওয়েল বা টিস্যু পেপারে মুড়িয়ে মুখবন্ধ পাত্রে ঢুকিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। ৫-৭ দিন ভালো থাকবে। কাঁচা মরিচ ধুয়ে পানি ঝরিয়ে শুকনা তোয়ালের ওপর রেখে বোঁটা ফেলে কিচেন টাওয়েল বা টিস্যু পেপারের ওপর শুকিয়ে নিন। একই পদ্ধতিতে টিস্যু পেপারজাতীয় কিছুতে মুড়িয়ে পাত্রে ঢুকিয়ে ফ্রিজে রাখুন। চাইলে কাঁচা মরিচ রাখতে পারেন কাগজের প্যাকেটেও (তাহলে টিস্যু পেপারজাতীয় কিছু লাগছে না, লাগছে না আলাদা পাত্রও)। কাঁচা মরিচ ফ্রিজে ২০-২৫ দিন সতেজ থাকে।
ফলমূলও তাজা থাক
ফলমূল ধুয়ে–মুছে ফ্রিজে অপেক্ষাকৃত বড় ছিদ্রযুক্ত ড্রয়ারে রাখুন। চাপাচাপি করে নয়। টাটকা ফল হলে ২০-২৫ দিন ভালো থাকে। পেঁপে, তরমুজ প্রভৃতি ফালি করে আলাদা আলাদা সেলোফিন কাগজে ভালোভাবে পেঁচিয়ে ফ্রিজে রাখতে পারেন। ৩-৪ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে ফালির পরিবর্তে একেবারে কেটে টুকরা করে রাখা ফল ফ্রিজে তেমন ভালো থাকে না বলেই জানালেন এই রন্ধনবিদ