বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতুর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমি বিস্মিত হয়েছি। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তিনি যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, এ ধরনের উক্তি বলতে পারেন না। বেগম খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী এটি তাকে সরাসরি হত্যার হুমকির শামিল।
বৃহস্পতিবার জেলা বিএনপি কার্যালয়ে শ্রমিক দলের আয়োজনে সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেওয়া, এটা কখনো একটা স্বাভাবিক ব্যাপার হতে পারে না। আমি বিস্মিত হয়েছি এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি এবং তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এ রকম অরাজনৈতিক, অশালীন বক্তব্য আমরা কেউ কখনো আশা করতে পারি না। কিন্তু ওনার স্বভাবই এটা। উনি এভাবেই কথা বলেন এবং এভাবেই তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অশালীন ভাষায় কথা বলেন, আচরণ করেন। এটা রাজনৈতিক কোনো শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এ ধরনের একটি নেতৃত্ব জাতি আজকে সহ্য করছে। তিনি ইদানীং যে সকল কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন, এটা পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত, স্বাধীনতা সবকিছুর বাইরে, ভদ্রতার বাইরে কথাবার্তা বলছেন। এই কথাটা বলার অর্থই হচ্ছে তিনি একটি হুমকি দেওয়ার মত। এটা কল্পনাও করা যায় না। এটা আমরা যারা সুস্থ চিন্তা ভাবনা করি তারা কখনো করতে পারে না। আমি এটির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এ ধরনের বক্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, অন্যথায় আইনের কোনো বিষয় থাকলে আমরা তা খতিয়ে দেখবো।
বিদেশিদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন এমন অভিযোগের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সব সময় আ. লীগ মানুষের ওপর দোষ চাপায়। বরং তারাই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। আমেরিকা গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাহায্য চেয়েছেন। নির্বাচনে আমাদের সহায়তা করবেন। আমরা বিদেশিদের কাছে এ ধরনের কাজ করিনি। করিও না। এক এগারোতে তারাই সামরিক সরকার এনেছিল। সেখানেও তারাই ছিল। সেই সরকারকে তারা সব রকম বৈধতা দিয়েছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি আ. লীগ সরকারকে। আমরা আগামী নির্বাচনে কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছি না, তবে নির্বাচন কীভাবে হবে সেটা ভাবছি। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার যে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তার পরে নতুনভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুন উর রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নূর করিম, শ্রমিক নেতা দানেশ আলী, আব্দুল জব্বার সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, উপজেলা বিএনপির নেতা আব্দুল হামিদসহ দলীয় নেতা কর্মীরা।