ঢাকা ওয়াসা পানির দাম বাড়িয়ে নিজেদের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও অমিতব্যয়িতার দায় জনগণের ঘাড়ে চাপাতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ক্যাব বলছে, গ্যাস-বিদ্যুতের পর ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ালে ভোক্তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়বে। সরকার দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রের বদলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে চালাতে চাচ্ছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার অনলাইনে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ক্যাব।ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, মানুষকে স্বস্তিতে থাকতে দেওয়া কল্যাণ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। অথচ সরকার দেশকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে চালাতে চাইছে। ঢাকা ওয়াসা ভোক্তাদের ওপর বাড়তি বোঝা চাপিয়ে নিজেদের লাভ দেখায়। পুরস্কার নয়, তারা তিরস্কার পাওয়ার যোগ্য। উন্নয়নের মহাসড়কে জনগণ নিষ্পেষিত হলে সব উন্নয়নই ম্লান হয়ে যাবে।ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামসুল আলম বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মতো অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য কত বাড়বে, সেটার কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। যে যেভাবে পারছে, দাম বাড়াচ্ছে। বর্তমানে সরকারি কোম্পানিগুলো যেভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়িয়ে জনগণকে লুণ্ঠন করছে, তা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চেয়ে বেশি। মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভোক্তাদের দুর্ভোগ উপেক্ষা করলে পরিণতি ভয়াবহ হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মতো জীবনের মৌলিক তিনটি চাহিদাকে অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মধ্যবিত্তের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ছে। করোনার এ দুঃসময়ে দ্রব্যমূল্যের দামও ক্রমাগত বাড়ছে।সাজিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় ক্যাবের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। সভার ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ক্যাবের মুখপত্র ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আবদুল হান্নান।করোনা মহামারির মধ্যে আবারও পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। এ দফায় সংস্থাটি পানির দাম অন্তত ২০ শতাংশ বাড়াতে চায়। ঢাকা ওয়াসা আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন দর কার্যকর করতে চায়। গত দুই বছরে দুবার আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পানির দাম বাড়িয়েছে ঢাকা ওয়াসা।