দিনাজপুর সংবাদাতাঃ দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাটে অবস্থিত লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে সিজারের পর প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। স্বজনদের দাবি ক্লিনিকে সিজারের পর রোগীর সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসক না থাকায় সঠিক চিকিৎসাসেবা দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দাবি করেন রোগীর চিকিৎসায় আমাদের কোন ধরনের গাফিলতি ছিল না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার (৫ফেব্রুয়ারী) বিকেলে উপজেলার টংগুয়া গ্রামের ধরপাড়ার আবু সায়েমের স্ত্রী মাজেদা বেগম (৩৫) এর প্রসব বেদনা শুরু হলে পাকেরহাট লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পরে ঐ ক্লিনিকের দায়িত্বরত নার্সরা নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করার পর রোগীর স্বজনদের আগ্রহে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে দিনাজপুর এম আঃ রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জন ডাঃ রবিউল ইসলাম সিজার করে চলে যান।
এরপর প্রসূতির রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে প্রসূতি ও নবজাতককে নার্স ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রদান করেন। এরপরও তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে প্রথমে নবজাতকে ও পরে রাত ৪টার দিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এ্যাম্বুলেন্স ম্যানেজ করে দিয়ে দিনাজপুর এম. আঃ রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রসূতির ও তার কিছুক্ষণ পর নবজাতকের মৃত্যু হয়। এর আগেও কিছুদিন আগে পাকেরহাটে অবস্থিত ইনফিনিটি ক্লিনিকে এক প্রসূতি ও মমতাজ ক্লিনিকে এক নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
প্রসূতির পরিবার জানান, চিকিৎসকের ভুলে সিজার করতে গিয়ে নাড় কেটে ফেলে। পরে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুরে পাঠান। সেখানে ভর্তির পরপরই প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
অপারেশনকারী সার্জন ডাঃ রবিউল ইসলামের মুঠোফোন ও খুদে বার্তায় একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি।
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, আমাদের কোন ধরনের ঘাটতি ছিল না। সিজারের পর নবজাতকের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম. আঃ রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে প্রসূতির রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে আমরাই এ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে নিয়ে দিনাজপুর মেডিকেলে যাই। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা গেছেন। এর জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, এধরনের অনাকাঙ্খিত মৃত্যু কাম্য নয়। বিষয়টি জানার পর তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুতে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলার প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।