বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি কাল সোমবার বা মঙ্গলবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে সিত্রাং। এটি উপকূলের ছয় জেলায় আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজ্য আবহাওয়া দপ্তর থেকে আজ রোববার এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা পাওয়ার পর রাজ্য সরকার সিত্রাং মোকাবিলায় সার্বিক ব্যবস্থা নিয়েছে।
সাগর থেকে জেলেদের অবিলম্বে উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সমুদ্রতীরবর্তী এলাকাগুলোয় মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে। একই সঙ্গে অবিলম্বে এসব এলাকার মানুষকে উঁচু এবং পাকা বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে অবিলম্বে আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তুতিও চলছে।
ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এনডিআরএফকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় মাইকিং করে এনডিআরএফ বলেছে, কোনো পর্যটক যেন এ দুই দিন সমুদ্রে না নামেন। বিশেষ করে সুন্দরবন এলাকার মানুষজনকে সমুদ্র বা সমুদ্র উপকূলবর্তী নদীতে মাছ ধরতে না যাওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের বার্তায় বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে আন্দামান সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। সোমবার সেটা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এতে কালীপূজা ও দীপাবলির আনন্দ এবার ম্লান হয়ে যেতে পারে। তাই আগামী দুই দিন এই সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ২৫ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে। এ সময় সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। তাই সুন্দরবন এলাকার নদীগুলোয় চলাচলকারী ফেরি ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণকক্ষ সচল করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কলকাতা পৌরসভাও তাদের দপ্তরে দুটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম রোববার বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মোকাবিলায় পৌরসভাসহ রাজ্য সরকার সার্বিক ব্যবস্থা নিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলও প্রস্তুত আছে। স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংস্থাকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক দলকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। শহরের সব বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের বিভিন্ন স্কুল এবং কমিউনিটি সেন্টারে রাখার ব্যবস্থা নিয়েছে পৌরসভা।