এরম ভাবে কিছু সময় পার হয়ে যাবার পর, আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ক’টা বাজে। সে তার হাতঘড়ি দেখে জানালো বারোটা বেজে পঁচিশ মিনিট। আমি বড়শি গোছাতে শুরু করলাম। ওকেও বললাম বড়শি গোছাতে। তার কারণ জিজ্ঞেস করতেই ওকে খালার বাসায় যাবার কথা মনে করিয়ে দিলাম।
বাধ্য ছেলের মতো সে বড়শি গুছিয়ে নিল। আমি উঠতে যাব, সে আমার হাত ধরে আবার বসালো। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টি ওর দিকে তাকালাম। সে প্রথমে কিছু বললো না। খানিক পরেই আমাকে জিজ্ঞেস করলো, আমি খালার বাসায় যাবার জন্য এত উদগ্রীব কেন। আমি সিরিয়াস একটা ভাব মুখে এনে বললাম সে আমাকে কোনো কিছু নিয়ে সন্দেহ করে নাকি।
তাৎক্ষণিক সে আমার হাত শক্ত করে ধরলো এবং বললো,
-তেমন কিছুই না, আয়রা। আমি লক্ষ করেছি, তুমি ঐ খালাকে নিয়ে বেশ কৌতূহল। কী যেন সারাদিন ভাবো। আমার জানতে ইচ্ছে করছিল আর কি! তাই জিজ্ঞেস করলাম।
:হ্যাঁ, তুমি ঠিকই ধরেছো। আচ্ছা বলো তো, তুমি কী আলেয়া খালাকে দেখেছ?
-নাহ্। ওনাকে যতবার দেখেছি, ততবারই তো কালো বোরখায় ওনার আপাদমস্তক ঢাকা ছিল। অন্য কোনো পুরুষ মানুষ এমনকি তোমার বাবার সাথেও উনি প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেন না। বেশ ইন্টারেস্টিং মহিলা!
:জ্বী, জনাব। আর এই কারণেই আমি ওনার সম্পর্কে জানতে এত আগ্রহী। তুমি তো জানো, আমি বেশিদিন গ্রামে থাকিনি। মাধ্যমিক কমপ্লিট করেই শহরমুখী হয়েছিলাম। রিলেটিভদের বাসায়ই আমার স্টুডেন্ট লাইফ কেটেছে। মাঝে মাঝেই আমি বাসায় চলে আসতাম। তবে এই খালাকে দেখিনি।
মায়ের কাছ থেকে জানতে পারি, উনি নাকি ওনার ছেলেমেয়েকে নিয়ে বছর দু’য়েক আগে এসেছেন আমাদের এলাকায়। উনি রমিজ চাচার স্ত্রী। চাচা ঢাকায় রিক্সা চালাতেন। আকস্মিক এক দূর্ঘটনায় চাচা মারা গেলেন। আর তারপরই এনারা গ্রামে চলে আসেন।
-ওহ্, আচ্ছা। বিষয়টা খোলাসা করে বলার পর এতক্ষণে শান্তি পেলাম মনে। ঠিক আছে, যাও তাহলে। ঘুরে আসো।
:এখন নাহ্। লাঞ্চের পর। তুমি ঘুমিয়ো, আমি খালার সাথে যাব।
আয়ান সম্মতি দিল। এরপর আমরা বাসায় চলে আসলাম।
[চলবে]
Writer: Mahazabin Sharmin Priya