এই, তুমি জেগে উঠে আমার দেখায় বাধা সৃষ্টি করলে কেন, হুম?” বলেই সে আমার নাক টিপে ধরলো।
আমি হাসতে লাগলাম। কিসব পাগলের মতো কথা বলে সে! বেলকনির ডিমলাইটের মৃদ্যু আলো সামনের দেয়ালে পড়েছে। তার আলোতেই হঠাৎ দেয়াল ঘড়িতে চোখ পড়তেই দেখলাম তাহাজ্জুদের সময় হয়ে গেছে। দু’জনে দীর্ঘক্ষণ ধরে তাহাজ্জুদ পড়লাম। এরপর ফজরের ওয়াক্তে সে নামাজ পড়তে মসজিদে গেল আর আমি বাসায় নামাজ পড়ে নিলাম।
কিছুক্ষণ পর খেয়ে সে সকাল ৬টার দিকে রওনা দিলে আমি আয়েশাকে ফোন দিলাম। আয়েশা জানালো ১০টা নাগাদ চলে আসবে। আমার একটু খারাপ লাগায়, আমি শুয়ে পড়লাম।
কলিংবেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গলো। ঘড়িতে তখন ৯টা বেজে ১৫মিনিট। দরজা খুলে দিলে, আয়েশা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। আমি ওকে নিয়ে ড্রয়িংরুমেই বসে পড়লাম। কী হয়েছে জিজ্ঞেস করতে ও যা বললো, তাতে মনে হচ্ছে আমার পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে আর আমি মাটিতে ঢুকে যাচ্ছি।
“আয়ানরা যে গাড়িতে করে যাচ্ছিল, সেই গাড়িটা এক্সিডেন্ট করেছে। অবাক করা বিষয় হলো, গাড়িতে যতজন যাত্রী ছিল তারা কয়েকজন সামান্য আহত হলেও আয়ান ছাড়া আর কেউ মারা যায়নি। আয়েশার সেই বড় আপু কিছুক্ষণ আগে তাকে এসব জানিয়েছেন। আরও জানিয়েছেন সেই জামায়েত লোকেরা সবাই আয়ানকে নিয়ে ফিরে আসছে।” আয়েশার কথা শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। আমি কথা বলতে চাই কিন্তু সব কথা দলা পাকিয়ে গলার ওপারেই থেকে যায়, বেরিয়ে আসে না।
আমাকে সে শক্ত করে ধরেই আমার ফোন থেকে আম্মুকে ফোন দিয়ে সব জানায়। আমি উঠতে চেষ্টা করেও উঠতে পারছি না। আর কোনো কথা নেই, চোখের পানিতেই যেন বন্যা হচ্ছে। আয়েশা আমাকে ধরে ধরে বিছানা পর্যন্ত নিয়ে যায়।
[চলবে]
Writer: Mahazabin Sharmin Priya