এই প্রথম নিজেকে যেন খুব অসহায় মনে হলো। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, বাইরে বের হবার জন্য সুতির কয়েকসেট বড় জামা বানিয়ে নিব। যাতে পরবর্তীতে আর এরম সমস্যায় পড়তে না হয়।
.
এসব ভাবতে ভাবতেই খালার বাড়িতে এসে পৌঁছালাম। বাড়িতে ঢুকতেই গেটের কাছে দু’টি নারকেল গাছ। বাড়ির গেটসহ পুরো বাড়িটি টিনে ঘেরা। দু’টি শোবার ঘর, একটি গোয়ালঘর, একটি বড় ছাউনির নীচে মাটির চুলা আর তারই পাশে একটি রিক্সা রাখা।
বাড়িতে ঢুকেই খালা তার মেয়েকে ডাকলো। মেয়েটির নাম আয়েশা। খালার ডাক শুনে আয়েশা নামের মেয়েটির দরজা খুলে বেরিয়ে এলো। পরনে কালো রঙের লম্বা জামা আর মাথায় বিশাল কালো ওড়না। উচ্চতা ৫ ফুট ২ইঞ্চি হবে। অল্প বয়স্কা, পাতলা, শ্যামলা বর্ণের বেশ মায়াবী চেহারা। ঘন পল্লবের চোখ দু’টোতে নজরকাড়া চাহনি। মাথায় কাপড় দেয়ায় মুখে পবিত্রতার ভাব ফুটে উঠেছে।
আমাকে দেখে মুচকি হেসে বললো, “আপনি আয়রা আপু। আমি ঠিক বলেছি না?” আমি ওর কথায় সায় দিয়ে ওকে আরও ভালভাবে লক্ষ করলাম। এই মেয়ের হাসি এত সুন্দর কেন? আর কী মিষ্টি কণ্ঠস্বর!
আমাকে ওর ঘরে নিয়ে বসতে দিল। আমি বিছানার এক কোণায় বসলাম। ঘরটি বেশ ছিমছাম। সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে মেয়েটি। আমার একটু তেষ্টা পেয়েছিল। আমি আয়েশা বললাম, “আমাকে একটু ঠান্ডা পানি খাওয়াও না প্লিজ। আমার খুব পিপাসা পেয়েছে।”
আয়েশা বললো, ” আপু, আপনি খানিকটা অপেক্ষা করতে পারবেন? আমাদের গাছের ডাব পেরে রাখা আছে। আমি শুধু ডাবের মুখটা কেটে পানি নিয়ে আসবো। খুব মিষ্টি, আপনার ভাল লাগবে।”
আমি বললাম, “আচ্ছা যাও, নিয়ে এসো।” আয়েশা চলে যাওয়ার সাথে সাথে খালা এসে বললো, “এই পোত্থোম তোমরা হামার বাড়িত আইনেন, মায়ো। গরীম মানুষ হামরা, কী খাবার দেও তোমাক কন তো? তোমরা যত ভালোমন্দ খাবার খান, এইগ্লা তো হামার বাড়িত নাই, মায়ো। মোক তো শরম নাগতোচে, তোমাক ধরি আসিয়া। হটাত করি আইসপার চাইনেন, মুই না ও কইরবার পানু ন্যা।”
আমি খালার হাত ধরে বসিয়ে বললাম, “খালা এত ব্যস্ত হবেন না তো। আমি আপনার মেয়ের মতোই। আর আমি একটু আগেই খেয়ে এসেছি, আপনি দেখলেন না? এত খেতে পারি আমি?”
[চলবে]
Writer:Mahazabin Sharmin Priya