জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন, নির্বাচনের দিন সশস্ত্র বাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ ও বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান তিনি।
শনিবার বিকেলে বগুড়ার সূত্রাপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি এবং রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতি করে যাঁরা রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন, তাঁরা জাতির শত্রু। দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে মদকে সহজলভ্য করতে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার যুব সমাজ ধ্বংস করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির। তিনি বলেন, যাঁরাই ক্ষমতায় যাচ্ছেন, তাঁরা রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে দেশের সম্পদ লুটপাট করছেন। স্বাধীনতার ৫১ বছরেও মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় সাধারণ মানুষ এখন দিশাহারা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এ সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আল্লামা আবদুল হক আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম দলের পক্ষ থেকে ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন ছাড়াও তাঁদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে যেকোনো মূল্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও বাজার কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা, দেশে মদসহ সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করা, শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুসলিম শিশুদের জন্য নামাজ শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, শিক্ষা সিলেবাস থেকে ধর্মবিরোধী ও অবৈজ্ঞানিক সব লেখা বাদ দেওয়া, কারাগারে থাকা আলেম-ওলামাদের মুক্তি, সব রাজনৈতিক দলের জন্য সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক কর্মসূচি ও বাক্স্বাধীনতা উন্মুক্ত করে দেওয়া।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ও অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ সিদ্দিকুর রহমান, ইসলামী যুব আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ আল আমীন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বগুড়া জেলা সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, সিরাজগঞ্জ জেলা সভাপতি মুফতি মুহিবুল্লাহ, পাবনা পশ্চিম জেলা সভাপতি অধ্যাপক আরিফ বিল্লাহ, রাজশাহী জেলা সভাপতি মাওলানা হুসাইন আহমদ, নাটোর জেলা সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, নওগাঁ জেলা সভাপতি মাস্টার আশরাফুল ইসলাম, পাবনা পূর্ব জেলা সভাপতি মাওলানা সুলাইমান, জয়পুরহাট জেলা সভাপতি মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা আলী আহমদ, বগুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য হুমায়ুন কবির চৌধুরী প্রমুখ।