চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে দায়িত্ব পালনের সময় নারী সাংবাদিক মারজান আক্তারকে হেনস্তার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক নেতারা। এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন তাঁরা। আজ সোমবার বিকেলে গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ক্যাম্পাসে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় একজন নারী সাংবাদিককে ছাত্রলীগ নামধারী কয়েকজন দুর্বৃত্ত হেনস্তা করেছে। ব্যাগ নিয়ে টানাহেঁচড়া করেছে। কটূক্তি ও হুমকি দিয়েছে। যা নজিরবিহীন। এ ঘটনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের চেষ্টার পাশাপাশি আগামী দিনের স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের জন্য হুমকি।
সংবাদকর্মী মারজান আক্তারকে হেনস্তার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক নেতারা। বিবৃতিতে বলা হয়, দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান শুধু একজন সংবাদকর্মীই নন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একজন নারী শিক্ষার্থীকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পাঁচ দিন পার হলেও এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, যা দুর্বৃত্তদের প্রতি প্রশাসনের নীরব প্রশ্রয়ের ইঙ্গিত দেয়। যেটি শুধু স্বাধীন সাংবাদিকতায় নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ হাজার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তাহীনতাকে তুলে ধরে।
বিবৃতিদাতারা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি হামিদ উল্লাহ, মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, খলিলুর রহমান, রুবেল খান, মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, এহসান জুয়েল, আল-আমীন দেওয়ান, ইলিয়াছ সরকার, ওমর ফারুক, সুজন ঘোষ, হেদায়েত উল্লাহ খন্দকার পলাশ, হুমায়ুন মাসুদ, ফারুক আবদুল্লাহ, আবু বকর ছিদ্দিক রাহাত, আশহাবুর রহমান শোয়েব, সৈয়দ বাইজিদ ইমন, আবদুল্লাহ আল ফয়সাল, ইমরান হোসাইন ও সাইফুল ইসলাম। সাবেক সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে মজুমদার নাজিম উদ্দিন, আবদুস সবুর, রিয়াজ রায়হান, মো. এমদাদুল হক, মাহবুব মিলন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আশরাফ রেজা, তাসনীম হাসান, মণ্ডল মোহাম্মদ আরিফ, মো. মাহমুদুর হাসান, জোবায়ের চৌধুরী, মনোয়ার রিয়াজ মুন্না ও রায়হান উদ্দিন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বাধা পেয়ে প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। মূল ক্যাম্পাসে চারুকলা স্থানান্তরের দাবিতে ওই দিন তাঁদের আন্দোলনের ১০০তম দিন ছিল। সেদিন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ ওঠে চবি ছাত্রলীগের দুই উপপক্ষের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। হেনস্তার শিকার হন দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান আক্তার ও আরটিভির ফটোসাংবাদিক এমরাউল কায়েস।