খুব দ্রুত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে সরানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল।
এ দিকে উপাচার্যের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে গোলচত্বরে আলোচনায় বসেছেন আন্দোলনরতরা।
উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে সরানো হবে কি-না? সরালে কত দিনের মধ্যে? অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসের কত দূর, তার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের যোগাযোগ হচ্ছে কি-না? এমন নানা প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এসব বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে কথা হয়েছে দেশ রূপান্তরের। তিনি জানিয়েছেন, অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তারা যখনই তার সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় চাচ্ছে তখনই সময় দিচ্ছেন ড. জাফর ইকবাল।
ওই মুখপাত্র বলেন, ‘স্যার আমাদের বলছেন, সরকারের একবারে উচ্চপর্যায়ে তিনি কথা বলে এসেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস স্যারকে দিয়েছে সরকারের ওপর মহল।’
এই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘গত ৪/৫ দিন যতবারই স্যারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তিনি আমাদের আশ্বস্ত করছেন। উপাচার্যকে সরানোর এক দফা দাবি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হবে- এমনটি জানিয়েছেন জাফর ইকবাল স্যার। এখন পর্যন্ত জাফর স্যার আমাদের কোনো নেতিবাচক কথা বলেননি। স্যার আমাদের জানিয়েছেন, খুব দ্রুত উপাচার্যকে সরানো হবে।’
গত ১৩ জানুয়ারি বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনে ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার পর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির আন্দোলনে রূপ নেয়। এর আগে ছাত্রলীগও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়।
১৯ জানুয়ারি দুপুরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৪ জন আমরণ অনশনে বসলে আন্দোলন তীব্র রূপ লাভ করে। প্রায় ১৬৩ ঘণ্টা পর ২৬ জানুয়ারি সকালে তারা অনশন ভাঙেন।
তাদের অনশন ভাঙাতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দম্পতি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হক। তাদের আশ্বাসেই অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অনুরোধে উপাচার্যের বাসভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে অবরোধ সরিয়ে নেন আন্দোলনকারীরা।
পরে ড. জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হকের হাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তুলে দেন।
দাবিগুলো হলো: উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগসহ ছাত্র উপদেশ পরিচালক অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ, ক্যাম্পাসের সবগুলো আবাসিক হল সচল রাখার বিষয়ে উদ্যোগ, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য দেওয়া ৫ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন, অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং অনশনরত শিক্ষার্থী ও উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ভার বহন।