এক মোটরসাইকেলে চারজন আরোহী। স্বামী-স্ত্রী ও তাঁদের দুই মেয়ে। মোটরাসাইকেলে ঝুলানো ছিল আম আর দুধবোঝাই কয়েকটি ব্যাগ। এভাবে রাজবাড়ীর পাংশা থেকে কুষ্টিয়া শহরের বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। পথে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। ঘটনাস্থলে মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর চার ঘণ্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বড় মেয়ে মারা যায়।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দুটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
নিহত দুজন হলেন কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং সি ব্লকের বাসিন্দা আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী রিনা খাতুন (৩০) ও তাঁদের বড় মেয়ে জয়া খাতুন (১১)। দুর্ঘটনায় আশরাফুল ও তাঁর ছোট মেয়ে আহত হন। আশরাফুল পেশায় মোটরগাড়ির মেকার।
কুষ্টিয়া চৌড়হাস হাইওয়ে থানা–পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল তাঁর মোটরসাইকেলে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে পাংশার মাছপাড়া এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়ি কুষ্টিয়া হাউজিংয়ে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুষ্টিয়া কুমারখালীর নদন্দনালপুর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় পৌঁছান। এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই রিনা খাতুনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় আশরাফুল ও তাঁর দুই মেয়ে আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়। বড় মেয়ে জয়ার ডান পায়ে আঘাতজনিত কারণে রক্তক্ষরণ হয়। পরে রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রাতেই দুটি লাশ পরিবারের সদস্যরা নিয়ে যায়।
আহত আশরাফুল ইসলামের ভাষ্য, রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ একটি গাড়ি পেছন থেকে ধাক্কা দিলে সবাই সড়কে পড়ে যান।
তবে চৌড়হাঁস হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইদ্রিস আলী বলেন, দুর্ঘটনার কবলে পড়া মোটরসাইকেলের পেছনে কোনো আঘাত দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো গাড়ির হর্নের শব্দে হয়তো মোটরসাইকেলের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। মোটরসাইকেলটি সড়কের ওপর পড়ে যায়। এরপর হয়তো দুর্ঘটনাটি ঘটে। কয়েকটি স্পটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।