বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রথম সিরিজ হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল তাসকিন আহমেদের ৫ উইকেটের স্পেলে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৫৪ রানে অলআউট হয়েছে। সিরিজের প্রথম ম্যাচেও তাসকিনের স্পেলেই ম্যাচে ছিটকে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অনুমিতভাবেই কাল ম্যাচসেরার সঙ্গে সঙ্গে সিরিজসেরাও হয়েছেন বাংলাদেশি পেসার।ম্যাচ শেষে হারের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ মার্ক বাউচার অবশ্য তাসকিনের কথা বলেননি। দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেওয়া ও নিজের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং–ব্যর্থতার বিশ্লেষণে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ, অর্থাৎ সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের প্রসঙ্গই তুলে এনেছেন।
সেঞ্চুরিয়নের উইকেটে প্রথম ম্যাচেও বাংলাদেশের স্পিনাররা ভূমিকা রেখেছিলেন। সাকিব উইকেট না পেলেও রাশ টেনে রেখেছিলেন মাঝের ওভারগুলোয়। আর শেষ দিকে স্লগ ওভারে বল করেও ৪ উইকেট পেয়েছিলেন মিরাজ। গতকালের উইকেটেও নিয়ন্ত্রিত বোলিং দিয়ে ভূমিকা রাখার সুযোগ পেয়েছেন স্পিনাররা। পাওয়ার প্লেতে বল করতে এসে মিরাজ ফিরিয়ে দিয়েছেন কুইন্টন ডি কককে। রান আটকে রেখে চাপ সৃষ্টি করার পাশাপাশি টেম্বা বাভুমাকে বিদায় করেছেন সাকিব আল হাসান।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পেস–সহায়ক ওয়ান্ডারার্সের উইকেটে আক্রমণাত্মক খেলেছেন ডি কক-ভেরাইনারা। কিন্তু গতকাল উইকেটে স্পিনাররা সহায়তা পাচ্ছেন দেখে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা। বাউচারের ধারণা, স্পিন নিয়ে মনের ভেতরে থাকা জুজু কাল আবার বেরিয়ে এসেছিল, ‘আমার ধারণা, ওয়ানডে দলের আমরা যেভাবে খেলতে চাই সেটার ওপর বিশ্বাস রাখা দরকার। আমরা শ্রীলঙ্কায় স্পিন ভালো খেলেছি। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় ফেরার পর যখন কন্ডিশন স্পিনারদের সাহায্য করল, আমরা ঠিক পুরোনো ঢঙে ফিরে গেছি। আমরা এখনো অনেক আলাপ করছি, ছেলেদের বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করছি, স্পিন উইকেটে এভাবেই খেলতে হয়।’
সাকিবদের বলের গতি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের মনে অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে
সাকিবদের বলের গতি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের মনে অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে ছবি: এএফপি
গত সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার কন্ডিশনে এক ম্যাচ ছাড়া বাকি দুই ম্যাচেই মহীশ তিকশানা, হাসারাঙ্গা ও জয়াবিক্রমাদের সামলেছেন বাভুমা, র্যাসি ফন ডার ডুসেনরা। ঘরের মাঠে বছরের শুরুতে ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন, যুজবেন্দ্র চাহালদের বিপক্ষেই তো ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাহলে বাংলাদেশের বিপক্ষে এতটা রক্ষণাত্মক কেন খেলেছে স্বাগতিক দল?
এর ব্যাখ্যায় মিরাজ ও সাকিবের বোলিংয়ের একটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ, ‘অতীতেও যেমন হয়েছে, আমাদের স্পিন খেলতে বরাবরই সমস্যা হয়েছে। উইকেটের চারপাশে রান করতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। স্পিন খেলার সময় আমাদের যথাযথ ও আগ্রাসী হতে হবে এবং সে সঙ্গে বুদ্ধিও খাটাতে হবে। পার্লে ভারতের বিপক্ষে র্যাসি (ফন ডার ডুসেন) যেমন খেলেছিল, তেমন। সে খেলাটার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এবং ম্যাচের পরিস্থিতি বদলে দিয়েছিল। বাংলাদেশের স্পিনাররা আমাদের বিপক্ষে খুবই ধীরে বল করেছে, ফলে এগিয়ে গিয়ে মাথার ওপর দিয়ে মারা কঠিন ছিল। আমাদের সে ক্ষমতা আছে। কিন্তু এমন বোলিংয়ের বিপক্ষে সেটা করার বিশ্বাস ছিল না। এই সিরিজে আমরা প্রায় খোলসবন্দী ছিলাম।’