টেম্পার টেস্টার যন্ত্রের কাজ কী?
মৌমাছির বিষ হুলকে ভয় করে না, এরকম লোকের জুড়ি মেলা ভার। শত্রুর সুতীক্ষ্ণ তরবারিকে মানুষ ভয় করুক আর না-ই করুক মৌমাছির হুলের আঘাতকে তার চেয়ে অনেক বেশি ভয় করে। এখন প্রশ্ন হলো, মৌমাছি হলেই কি আমাদের আতঙ্কের কারণ হবে?
না। এক প্রজাতির মৌমাছি দেখা যায়, যারা আপাতদৃষ্টিতে শান্ত। কিন্তু এই শান্ত মৌমাছির শণাক্তকরণের উপায় কী?
মৌমাছিকে চেনার অর্থাৎ কে নিরীহ গৃহপালিত মৌমাছি আর কোনটি বা খুনি মৌমাছি তা সনাক্ত করণের জন্য আধুনিক বিজ্ঞান একটি চমৎকার যন্ত্র তৈরি করেছেন। আর সে যন্ত্রটির নাম করণ করা হয়েছে ‘টেম্পার টেস্টার’।
যন্ত্রটি নির্মাণ করেছেন এরিক এরিকসন এবং হেওয়ার্ড স্প্যাঙলার। তাঁদের দুজনেরই জন্মভূমি অরিজোনায়। উভয়ই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার এর কর্মী ছিলেন। সেখানেই তাঁরা যৌথভাবে গবেষণায় লিপ্ত থেকে উক্ত যন্ত্রটি নির্মাণ করেন।
তাঁদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোন ঘটনা তাঁদের উক্ত যন্ত্রটি নির্মাণের প্রেরণা জুগিয়েছিল? তারা জানান-
গত প্রায় ত্রিশ বছর আগে একদল মৌমাছি ব্রাজিলে দল ছাড়া হয়ে পড়ে। তারপর তারা হানা দেয় টেক্সাসের দক্ষিণ দিকের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে। তারা কিন্তু নেহাৎ-ই নিরীহ। আঘাত করলেও পাল্টা আঘাত হানে না বা হুল ফোটাতে উৎসাহী হয় না। তবুও মানুষের সন্দিগ্ধ মন বুঝ মানবে কেন? তাদের আক্রমণের আশংকায় সর্বদা বিমর্ষ হয়ে থাকে। তারা আবার এসেই প্রজননের মাধ্যমে সংখ্যায় বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে যায়। তাই মৌমাছির হুলাতঙ্ক থেকে মানুষকে অভয় দানের উদ্দেশ্যে তাঁরা গবেষণায় লিপ্ত হয়েছিলেন।
তাঁদের আবিষ্কৃত টেম্পার টেস্টার নামক যন্ত্রটির প্রধান অংশ একটি অনুভাবক আর অন্যটি নিছকই একটি বোতল। বোতলটির ভেতরের অনুভবকের কাজ হলো মৌমাছি বোতলটির গায়ে কয় বার আঘাত হানে তার হিসাব রাখা।
একজন নিরাপদ পোশাক পরে মৌচাকের গায়ে থেকে থেকে একটি লম্বা নলের সাহায্যে ফুঁ দেয়। উদ্দেশ্য তাদের উত্তেজিত করে তোলা। আর একহন মৌমাছির যাতায়াতের পথে বোতলটিকে বার বার দোলায়। নিরীহ মৌমাছিরা বোতলটির গায়ে মাত্র কয়েকবার আঘত হানে। আর আফ্রিকার খুনি মৌমাছিরা বোতলটির গায়ে হূল ফোটাতে চেষ্টা করে।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।