মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসে সেনাবাহিনী। ক্ষমতায় বসার পর দেশটির সাধারণ জনগণ জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামে। আর এবারই প্রথম জান্তাবিরোধী কোনো আন্দোলনে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহীরা অংশ নিচ্ছে। দলগুলো জান্তাবিরোধীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনী লড়াই হয়েছে। সেনাবাহিনী বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করেছে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের দমনে।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটির বিদ্রোহীরা। সেখানে জঙ্গলের আড়ালে অস্থায়ী কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে নানা অস্ত্র। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে স্থানীয় লোকজন আত্মরক্ষামূলক দল গঠন করে স্থানীয়ভাবে রাইফেলসহ নানা যুদ্ধাস্ত্র তৈরি শুরু করেছে। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে তৈরি এসব অস্ত্র সবসময় মানসম্মত অস্ত্রের কাজ করে না।
মিয়ানমারজুড়ে বেশকিছু এলাকায় বিশেষ করে মফস্বল এলাকাগুলোতে পুলিশের নির্যাতনে নিহতের ঘটনা বাড়তে থাকায় স্থানীয় প্রতিরক্ষামূলক দল গঠিত হয়েছে। থাইল্যান্ডের সীমান্তের কাছে কায়াহ রাজ্যে একটি অস্থায়ী অস্ত্র কারখানা গড়ে তুলেছে বিদ্রোহীরা। সেখানে অপেশাদার অস্ত্র প্রস্তুতকারীরা অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। যদিও স্থানীয় কারখানায় তৈরি এসব অস্ত্র যুদ্ধের জন্য মানসম্মত নয়।
কোহ জন নামের আত্মরক্ষা বাহিনীর এক সদস্য বলেন, ‘এক রাতে সেনাবাহিনী আমাদের ওপর ভারী গোলাবর্ষণ করছিল। তারা আমাদের ২০০ থেকে ৩০০ ফুটের কাছাকাছি চলে আসে। তাদের ওপর গুলি চালানো শুরু করলেও বন্দুক থেকে ঠিকমতো গুলি বের হয়নি। কারণ এগুলো ছিল স্থানীয়ভাবে তৈরি। আমরা দুজন স্নাইপারের সাহায্য নিয়েছিলাম। আট রাউন্ড গুলি ছোড়া হলেও শুধু ছয় রাউন্ড গুলি ফুটেছিল।’
স্থানীয়ভাবে প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠিত হলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শত শত অভ্যুত্থানবিরোধী বিদ্রোহী দেশটির বিভিন্ন শহর ও মফস্বলে ছড়িয়ে পড়েছে। সেনা প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য তারা বিদ্রোহী-অধীনে থাকা অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তবে খণ্ডকালীন যোদ্ধারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যেকোনো সংঘাতে তাদের প্রতিকূলতা বিষয়ে জানে। কোহ জন তাদের সাম্প্রতিক লড়াইয়ে মিয়ানমারের অতিরিক্ত সেনাসদস্য ও ভারী অস্ত্রে হকচকিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন সেনাক্যাম্প দখল করার চেষ্টা করছিলাম, তখন তাদের হেলিকপ্টার চলে আসে এবং সেখান থেকে গুলি চালানো হয়।’ সম্প্রতি মিয়ানমারের কায়াহ রাজ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আর্টিলারে শেল ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে।