জানেন কি, প্রাকৃতিক বরফ কৃত্রিম বরফের তুলনায় সাদা কেন?
প্রাকৃতিক বরফ কৃত্রিম বরফের তুলনায় সাদা। আবার কৃত্রিম বরফ প্রাকৃতিক বরফের তুলনায় অনেক স্বচ্ছ। এর কারণ কী?
অবচেতনভাবে বিষয়টি আমরা লক্ষ্য করলেও হয়তো সে বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব একটা ভাবনা চিন্তা করিনি।
যাহোক, চলুন আলোচনায় ফেরা যাক।
প্রকৃতিক বরফ ও কৃত্রিম বরফ উভয়ই প্রকৃতপক্ষে পানি জমে কঠিন হওয়ার রূপান্তর।
সূর্যের উত্তাপে পানি বাষ্পে পরিণত হয়। তা স্বাভবিক বায়ুর তুলনায় হালকা বলে উপরে উঠে যায়। উপরে গিয়ে শৈত্যের সংস্পর্শে জলীয় বাষ্প তুষারে পরিণত হয়।
তবে কার্যত দেখা যাচ্ছে, জলীয় বাষ্প পানিরই নামান্তর ছাড়া আর কিছুই নয়। অর্থাৎ পানি জমেই তুষার বা প্রাকৃতিক বরফ সৃষ্টি হচ্ছে। আবার পানি জমেই সৃষ্টি হচ্ছে কৃত্রিম বরফ। তবে তাদের মধ্যে কিছু বর্ণগত বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
আপনি কি জানেন, এই বৈসাদৃশ্যের কারণ কী?
এই বৈসাদৃশ্যের কারণ হলো, জলীয় বাষ্প জমে ঊর্ধ্বাকাশে প্রাকৃতিক বরফ সৃষ্টি হয়। আর এই প্রাকৃতিক বরফ সৃষ্টি হওয়ার অর্থই হচ্ছে পরিষ্কার স্ফটিক তৈরি হওয়া। এরপর বায়ুর দ্বারা চালিত ও তাড়িত হয়ে স্ফটিকগুলো বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্থানে গমন করে। আবার কখনো কখনো সামান্য উপরে ও নিচে পরিচালিত হয়ে থাকে। এর ফলে আরো বেশি সংখ্যক স্ফটিক তৈরি করতে সক্ষম হয়।
আবার অধিকাংশ সময় একাধিক তুষার কণা একত্রিত হয়ে অপেক্ষাকৃত বড় আকার ধারণ করে এবং ওজনে ভারি হয়৷ ফলে তাদের পক্ষে তখন আর বায়ুমন্ডলে ভেসে বেড়া সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে পেঁজা তুলোর মত পৃথিবীর বুকে নেমে আসে। আর তাদের সংখ্যাও থাকে অগণিত।
ওই স্ফটিকাকার তুষার কণাগুলো থাকে স্ফটিকাকার এবং মসৃণ। আবার কোনটি বা নক্ষত্রের আকার বিশিষ্টও হয়। পৃথিবীর বুকে নেমে আসার সময় স্ফটিকাকার কণাগুলির ওপর সূর্যের রশ্মি পড়ে। আর সূর্যের রশ্মি যখন পড়ে তখন তা তুষার স্ফটিকের বিভিন্ন তলের দ্বারা প্রতিফলিত হয়। আর আলো বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রতিফলিত হয় বলেই প্রাকমতিক বরফকে একদম খুব বেশি সাদা দেখায়।
কিন্তু কৃত্রিম বরফের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। কৃত্রিম বরফ প্রচুর পরিমাণ পানি দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে তাপমাত্রা অনেক নিচে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু তাপমাত্রা নামানে হলেও তাদের মাঝে প্রাকৃতিক বরফের মত স্ফটিক গঠন হয় না। তাই কৃত্রিম বরফ অনেক স্বচ্ছ দেখায়।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।