রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালগুলিতে সারি সারি বাস চলাচল করছে। তবে চারিদিক শান্ত, পিন ড্রপ নীরবতার মতো। রাত কিছুটা গভীর হয়ে যেতেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে চিৎকার শুরু হয়। বিচ্ছিন্নভাবে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার বাস। বিশেষত বাসগুলি চট্টগ্রামের দিকে ছুটে চলেছে। তবে কোনও দূরপাল্লার কোনও বাস ব্রড দিবালোকায় রাজধানী ছাড়ছে না। অন্যদিকে, দিনের বেলা রাজধানীর বাইরে যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার বাস চলাচল করা হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। অভিযোগ রয়েছে যে রাতের বেলা অবরুদ্ধ বাস ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শ্যামলী, সেঁজুতি ও সেন্টমার্টিন পরিবহনের একাধিক বাস যাত্রীদের নিয়ে গভীর রাতে ঢাকা ছেড়ে সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে। ভাড়া প্রতি যাত্রীর জন্য ১৮,০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।
মিরপুরের যুবক আহমেদউল্লাহ হাসান সোমবার রাতে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি চট্টগ্রামের শিল্প প্রকৌশলী। তিনি জানান, পরিচিত একজন তাকে পরিচয় করিয়েছিলেন রবিন নামের এক যুবকের সাথে। রাত দশটার দিকে রবিন তাকে নয়া পল্টনের ভিআইপি টাওয়ারের সামনে আসতে বলে। তিনি নয়া পল্টনে পৌঁছে দেখলেন সেখানে একটি মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে আছে। এরই মধ্যে সেখানে আরও কয়েকজন উপস্থিত হয়েছিল। মাইক্রোবাসে উঠার সময় তাদের কাছ থেকে আগেই বাসের ভাড়া নেওয়া হয়। তার কাছ থেকে এক হাজার ছয়শত টাকা নেওয়া হয়েছিল। মাইক্রোবাসটি তাদের কাঁচপুর ব্রিজের পশ্চিম প্রান্তে নিয়ে যায়। তাদের একটি বাসে তুলে নেওয়া হয়েছিল। সামনের কাঁচের ট্রান্সপোর্টের নামটি সাদা কাগজের সাথে আবৃত। তবে ভিতরে থেকে বোঝা যাচ্ছে পরিবহণের নাম শ্যামলী। তারা ওই বাসে করে চট্টগ্রাম পৌঁছেছিল। পুলিশ পথে বেশ কয়েকটি জায়গায় বাস থামিয়ে দেয় তবে চালক ও হেলপার পুলিশের সাথে আলোচনা করে সমস্যাটি সমাধান করে।
তারা গতকাল ফকিরাপুলের সেন্ট মার্টিন, কমলাপুরের সেঁজুতি এবং শ্যামলী পরিবহনের প্রধান কাউন্টারে গিয়ে তাদের দেখতে পেয়েছিল যে তারা বন্ধ রয়েছে। তবে দুটি পরিবহনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী বেশ কয়েকজন যাত্রী নিশ্চিত করেছেন যে তারা একই পরিবহণে চট্টগ্রামে গেছে। শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারের পাশে একটি চায়ের দোকানে বসে ম্যানেজার আনন্দ কুমারের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, আমাদের কোনও পরিবহণই ঢাকা ছাড়ছে না।
গতকাল বিকেলে ফকিরাপুল এলাকায় বাস কাউন্টারগুলির সামনে টিকিট খুঁজতে গিয়ে এক শ্রমিক এগিয়ে এসে বলে, ‘আমি গ্রিনলাইন ট্রান্সপোর্টে কাজ করি। আমাদের বাস চলছে না, তবে আপনি যেতে চাইলে আমরা চট্টগ্রামে টিকিটের ব্যবস্থা করতে পারি। ভাড়া দিতে হবে ২৫০০ টাকা। ‘কোন পরিবহণে যেতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন,’ পরিবহনের নাম কী, আপনি যেতে চাইলে আপনাকে রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে এখানে আসতে হবে আমি আপনাকে বাসে নিয়ে যাব। ‘
বগুড়ায় অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী পরিবহন চলছে: সড়ক যানজট ও দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও মানুষ বগুড়া থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় ফিরেছেন। শহরতলির মহাসড়কের চৌরাস্তাতে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবসা ফুলে উঠছে। তারা যাত্রীপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা সংগ্রহ করছেন। অনেক সময় পুলিশের ঝামেলা এড়াতে একজনকে রোগী করা হচ্ছে এবং অন্যকে স্বজন দেওয়া হচ্ছে। বগুড়ার শেরপুরে হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক বানিউল আনাম বলেছিলেন, “রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা এখন বেড়েছে। এবং যাত্রীরাও স্বজনদের সাথে চটপটে পড়েছে। একজন রোগী, তবে গাড়িতে তাঁর সাথে দশ জন। আমাদের যদি থাকে কোনও সন্দেহ নেই, আমরা থামিয়ে দেব কখনও কখনও আমি কাগজপত্রগুলিও পরীক্ষা করে দেখি রোগীর নথি না থাকলে আমরা অ্যাম্বুলেন্সটি কোথা থেকে আসে সেদিকে ফেরা করি ” পুলিশ।
বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ফয়সাল আহমেদ বলেছেন, তাদের কাছে অনেক তথ্য রোগী পরিবার বা আত্মীয়স্বজন নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। এ জন্য নগরীর প্রতিটি কোণে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল সকালে আমি বগুড়ার বনানী মোড়ে গিয়ে দেখলাম একটি অ্যাম্বুলেন্স যাত্রীদের বাছতে অপেক্ষা করছে। শফিকুল নামে এক যাত্রী ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চালকের সাথে দর কষাকষি করছেন। চালক মিরাজ জানান, জনপ্রতি এক হাজার ২০০ টাকা দিতে হয়। আর লাগেজ নেই।
সাইরেনের পিছনে একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে থামল। মিনারা বেগম ও তার স্বামী মনির হোসেন সেখানে যাওয়ার জন্য ছুটে আসেন। দুজনেই ঢাকার একটি বেসরকারী সংস্থায় চাকরি করেন। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার তাদের সাথে বড় ব্যাগ থাকার কারণে সেগুলি নিতে রাজি হয় নি। বেশি টাকা চাওয়া সত্ত্বেও ড্রাইভার আবদুল গফুর বলেন, ব্যাগটি নিয়ে গেলে ট্রাকে যান।
তদন্ত অনুসারে, একা বগুড়ায় আইনী ও অবৈধ উভয়ই তিন শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এই অ্যাম্বুলেন্সের নব্বই শতাংশই এখন যাত্রী বহন করছে। জরুরী পরিস্থিতিতে অসুস্থ রোগীদের বহন করতে নগরীতে অ্যাম্বুলেন্সগুলি পাওয়া যায় না।
বগুড়া বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির নেতা আসাদুল্লাহ প্রামানিক বলেছেন, “আমরা প্রতিদিন এ জাতীয় যাত্রী বহন করার অভিযোগ পেয়েছি। সেটিও যাত্রীদের নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তবে এখন আর চালু হয়নি