কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি বর্ণান্ধ?
আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, কেবলমার মানুষই নয় অনেক প্রাণীর ক্ষেত্রের বর্ণান্ধত্ব দোষ লক্ষিত হয়। আসলে এটি কোনো বিশেষ রোগের পর্যায়ে পড়ে না। চোখের গঠন বৈচিত্র্যের জন্যই কোন কোন মানুষ বা প্রাণী বর্ণে বর্ণে প্রভেদ অর্থাৎ এক বর্ণের সাথে অন্য বর্ণের পার্থক্য করতে পারে না।
যেমন ধরা যাক, মধ্যযুগে ইউরোপীয় বিভিন্ন অঞ্চলে মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত অপরাধীকে দুর্ধর্ষ প্রকৃতির অতিকায় একটি ষাঁড়ের সামনে ছেড়ে দেয়া হত। ক্রোধোন্মত্ত ষাঁড়ের সঙ্গে লড়াই করে অপরাধী জীবন মরণ সংগ্রামে লিপ্ত হতে হত।
আবার ষাঁড়টির মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে তার সামনে এক টুকরা লাল রঙের কাপড় বার কয়েক নাড়িয়ে দেয়া হত। ব্যস! ক্রোধোন্মত্ত ষাঁড়টি ফোঁস ফোঁস করতে করতে অসহায় মানুষটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ত।
কিন্তু মজার ব্যাপার হল, পরবর্তী কালে গবেষণার মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকগণ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, ষাঁড় হলো বর্ণান্ধ একটি প্রাণী। তার চোখে লাল, নীল, কালো, সবুজ বা সাদা কোন রঙেরই কোন পার্থক্য নেই। লালের পরীবর্তে যে কোন রঙের কাপড় নাচালেই তাদের মধ্যে ক্রোধের সঞ্চার ঘটে।
জন্তু জানোয়াররা কথা বলতে পারে না। বর্ণ সমন্ধে তাদের ধারণার প্রমাণ নেয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু মানুষ কোনটি কোন বর্ণ তা আবার ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে।
গবেষকরা বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের দৃষ্টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, চেকোশ্লোভাকিয়ার মানুষেরা সবচেয়ে বেশি বর্ণান্ধ। তাদের চোখ লাল, নীল, কালো, সবুজ, সাদা রঙের পার্থক্য করতে অক্ষম।
আবার ফ্রিজি দ্বীপের এবং ব্রেজিলের মানুষের চোখ রঙ চেনার ব্যাপারে খুবই তীক্ষ্ণ। তারা বিভিন্ন রঙের অতি সূক্ষ্ম পার্থক্য থাকলেও সেটি অতি সহজেই ধরে ফেলতে সক্ষম। এমনকি কিছু দূরবর্তী স্থান থেকেও কোনো বস্তুর বিভিন্ন রঙ তারা আলাদা করে নিতে পারে।
আবার দৃষ্টি সমন্ধে গবেষণার ফলে জানা গেছে যে, কিছু কিছু লোক আছে যারা কেবলমাত্র সাদা এবং কালো রঙ দেখতে পায়। আর অন্য কোনো রঙ দেখতেও পারে না, পার্থক্যও করতে পারে।
হাউ মিরাকল!
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।