কোন কোষ কীভাবে মানুষের মধ্যে আত্মসচেতনতা বোধ জাগিয়ে তোলে?
আত্মসচেতনতা বোধ এমনই একটি জিমিস, যা মানুষকে কর্মে প্রবৃত্ত করে। কোনো ব্যাপারে কেউ যদি নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে তখন আর তার পক্ষে সেই বিশেষ কাজে উৎসাহী হওয়া ও কর্মে প্রবৃত্ত হওয়া সম্ভব নয়।
মানুষের মধ্যে আত্মসচেতনতা বোধ সঞ্চার করার উৎস তার মগজের একটি বিশেষ অংশ। এর নাম বেসাল গ্যাংলিয়া। এটি একটি স্নায়ুকোষের সমষ্টি। এটি সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকলে আমরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যাবতীয় কাজ করতে পারি। মানুষের শরীরের সর্বত্র এই স্নায়ু জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে। আমরা হাঁটতে যে পা দুটোকে ব্যবহার করি অর্থাৎ আমাদের পা দুটো আমাদের দেহের ভার বহন করে আমাদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারে, এ বোধ টুকু বেসাল গ্যাংলিয়াই আমাদের সঞ্চারিত করে।
আবার কাজ করা থেকে মুখে ভাতের গ্রাস তোলা পর্যন্ত যা কিছু কাজ আমরা করি, সবার প্রেরণার ক্ষেত্রেই এ স্নায়ুকোষটি আড়ালে কলকাঠি নাড়ায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা অসুস্থ হলে হাঁটাহাঁটি করা তো দূরের কথা, উঠে বসতেও যেন পারি না। তখন শিশি থেকে যে ঔষধ ঢেলে খেতে যাব সে শক্তিটুকু যেন আমাদের মধ্যে লোপ পায়। আসলে কি সব আমাদের শক্তিহীনতা বা শারীরিক দূর্বলতা কাজ করে?
অধিকাংশ ক্ষেত্রে শারীরিক দূর্বলতা এর জন্য দায়ী নয়। আমাদের গ্যাংলিয়া নামক স্নায়ুকোষের দূর্বলতার জন্যই আমাদের আত্মসচেতনতা বোধ হারিয়ে যায়। আমার দ্বারা যে এ কাজটি সম্ভব হতে পারে সে বোধ টুকুও ভেতর থেকে লোপ পায়, তখনই পরিবারের অন্যান্যদের মুখাপেক্ষী হয়ে উঠি। আবার যদি অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে বা নার্সিং হোমের শয্যা গ্রহণ করে থাকি তবে পরিচায়িকার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে উঠি।
শুধু বাহ্যিক রোগ ব্যাধির ক্ষেত্রেই নয়, মানসিক রোগের ক্ষেত্রেও বেসাল গ্যাংলিয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ বিশেষ স্নায়ুকোষটিই কর্ম প্রেরণা, কর্মে উৎসাহ ও নিরুৎসাহ সবই এর সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থা বা দূর্বলতার উপর নির্ভর করে।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।
