কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর গ্রামে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়ছেন আহত হন আরো ১০ জন।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকেল ৫টায় এ সংঘর্ষে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পুলিশ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান রতন।
নিহতরা হলেন স্থানীয় আস্তানগর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আজিজুল হকের ছেলে মতিয়ার রহমান (৪৫), দাউদ মন্ডলের ছেলে লাল্টু মন্ডল (৪২), মৃত হোসেন মন্ডলের ছেলে আবুল কাশেম (৬৫) এবং মৃত আবুল মালিথার ছেলে আব্দুর রহিম মালিথা (৭০)।
প্রথম তিনজন বর্তমান ঝাউদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান সমর্থক এবং আব্দুর রহিম মালিথা প্রতিপক্ষ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলীর সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আস্তানগর বাজারে কেরামত আলীর সমর্থক আব্দুর রহিম মালিথার সঙ্গে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে মেহেদী হাসানের সমর্থকরা রহিমের ওপর ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় লাঠির আঘাতে রহিম মাটিতে পড়ে যান। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মেহেদী সমর্থকরা স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। রহিমকে মারধরের সংবাদ পেয়ে কেরামত আলীর সমর্থকরা পাল্টা মেহেদী সমর্থকদের ওপর হামলা চালালে দু’পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে কেরামত আলীর সমর্থকরা উপর্যুপরি হামলা চালিয়ে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মেহেদী সমর্থক মতিয়ার, লাল্টু ও আবুল কাশেমের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
পরে সংবাদ পেয়ে ইবি থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি আহত ১০ জনের মধ্যে আরো দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল আলম।
ইবি থানার পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান রতন জানান, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে কেরামত আলী সমর্থক ও মেহেদী হাসান সমর্থকদের মধ্যে আগে থেকেই উত্তেজনা চলছিল। সোমবার বিকেলে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাক তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
তবে সংঘর্ষের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসানের ফোনে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ ছাড়া ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলীর ফোনে কল করলে তিনি জানান, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে লোকজন লেলিয়ে আমার দেহরক্ষী রফিকুলের বাবা রহিম মালিথাকে হত্যা করেছে।