ভারতের মহারাষ্ট্র ও কেরালার পরে দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ সক্রিয় করোনা রোগী এখন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। করোনা শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে কিছু বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।
রবিবার ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, সোমবার থেকে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে, আংশিক বন্ধ ট্রেন এবং সরকারি-বেসরকারি অফিসে উপস্থিতি ৫০ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখা হবে।
তবে করোনা রোধে এসব বিধি নিষেধের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ জারি রেখে মদের দোকান ও পানশালা খোলা থাকছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়াতে হরিয়ানা, দিল্লি ও উত্তর প্রদেশের মতোই পশ্চিমবঙ্গে রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় ও জরুরি সেবা চালু থাকবে।
বিধি নিষেধ জারির বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কোন কোন ক্ষেত্র বন্ধ থাকবে ও খোলা রাখা যাবে জানিয়েছেন। কোথায় কেমন নিয়ন্ত্রণ জারি থাকবে তাও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
খবরে বলা হয়, নাইট কারফিউয়ের ফলে সাধারণ ভাবে দোকান বাজার সব কিছু রাত ১০টায় বন্ধ করে দিতে হবে। বাজারে একসঙ্গে ৫০ শতাংশের বেশি ক্রেতা থাকতে পারবে না। এ নির্দেশনা থেকে ধরে নেয়া হয়েছে মদের দোকান, পানশালা ও রেস্তরাঁ ৫০ শতাংশ ক্রেতা নিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
এছাড়া, সিনেমা হল ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত শো চালু রাখতে পারবে। শপিং মলগুলো সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারবে। তবে সেখানেও ৫০ শতাংশের বিষয়টি প্রযোজ্য।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কাল থেকে সুইমিং পুল, জিম, স্পা, বিউটি সেলুন এবং ওয়েলনেস সেন্টারগুলো বন্ধ থাকবে।
সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো ৫০ শতাংশ জনবল নিয়ে কাজ করতে পারে। সব প্রশাসনিক বৈঠক ভার্চুয়ালি করতে হবে।
কলকাতার মেট্রো সার্ভিসগুলো ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করবে। লোকাল ট্রেন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলতে পারবে। দূরপাল্লার ট্রেনগুলোকে অবশ্য স্বাভাবিকভাবে চলতে দেওয়া হবে।
বিয়ে ও অন্যান্য সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ৫০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বা দাফনের জন্য উপস্থিতি সীমাবদ্ধ থাকবে ২০ জনের মধ্যে ।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে করোনায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ৫১২ জন। মারা গেছেন নয়জন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৯১৩ জন। কলকাতাসহ এ রাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৯৯৭ জন। আর মারা গেছেন ১৯ হাজার ৭৩ জন।