নিজ নিজ অবস্থানে থেকেই উদ্যাপন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল ফিতর কে । তিনি আর বলেন, ‘ভ্রমণ করোনাভাইরাসের বিস্তার আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং অত্যন্ত জরুরি না হলে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে আপনাদের সবার কাছে আমার অনুরোধ রইল স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রটোকলগুলো বজায় রাখতে ।’
প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন ,প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার ‘নবসৃষ্ট অবকাঠামো ও জলযান’ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে । প্রধানমন্ত্রী সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করেন ।
প্রধানমন্ত্রী আর বলেন, ‘জীবন সবার আগে। তবে বেঁচে থাকলে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা হবে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে সবাই ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন, সেভাবেই ঈদটা উদ্যাপন করেন। আর যাঁরা বিত্তশালী আছেন সেটা আরও বেশি সওয়াবের কাজ হবে
বলে আমি মনে করি ,যদি দুস্থদের একটু সহযোগিতা করেন’ ।
আর করোনা যাতে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, সে জন্য সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কে যে সংক্রমিত সেটা আপনি জানেন না।তাই কাজেই যাতায়াতটা করতে গেলেই সে যখন অন্য জায়গায় যাবে, তখন আরও অনেক লোককে করোনা সংক্রমিত করবে এবং তাদের জীবন নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি করবে। আর সে জন্যই সরকার যাতায়াত সীমিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে।’
সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন ,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনিবন্ধিত ও ফিটনেসবিহীন নৌযান যেন চলাচল করতে না পারে। তিনি আর বলেছেন, ‘উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে যদি আমরা জলযানগুলো পরিচালনা করতে পারি, তাহলে কিন্তু দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। তিাই সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় নৌযানে কাউকে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে না ওঠার এবং নৌযানের নিরাপত্তা বজায় রাখতে যাত্রী, মালিক এবং নৌযান কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি । আর তাড়াহুড়োয় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিজের এবং পরিবারের জীবন বিপন্ন না করারও আহ্বান জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএর ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজার, ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান, প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘টিএস ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই)’, বিশেষ পরিদর্শন জাহাজ ‘পরিদর্শী’, নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেজ, বিআইডব্লিউটিসির দুটি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি তাজউদ্দীন আহমদ’ এবং ‘এমভি আইভি রহমান’, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৫০০ পাকা বাড়ি বিতরণ এবং পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট মেরিন একাডেমি আজ যেসব অবকাঠামো ও জলযান উদ্বোধন করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন । তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন। গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস । একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয় অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কর্মকাণ্ডের ওপর । আর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে নতুন বাড়ির চাবি ও দলিল হস্তান্তর করেন। তবে এদিন ৫০০ বাড়ি হস্তান্তর করার কথা ছিল। যদিও অনুষ্ঠানে ৩৫টি পরিবারের কাছে চাবি ও দলিল হস্তান্তর করা হয়।আর এই প্রকল্পে মোট ৩ হাজার ৪২৩ পরিবারকে পুনর্বাসিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।