ধর্ম অবমাননার মামলায় মুন্সীগঞ্জের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা জজ মোতাহারাত আক্তার ভূঁইয়া রবিবার জামিন মঞ্জুরের পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।ছাড়া পেয়ে তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ রকম পরিস্থিতি যাতে রাষ্ট্রের আর কেউ না পড়ে। পরিবার ও তার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, প্রশাসনের কাছে আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাচ্ছি।তিনি যেন আগের মতো স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সে লক্ষ্যে রাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করেন।হৃদয়ের পক্ষের আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ কারাগারের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র যাচাই শেষে কারা কর্তৃপক্ষ শিক্ষককে মুক্তি দিয়েছেন।
গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির একটি অনির্ধারিত ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করছিলেন হৃদয় মণ্ডল। সেখানে একজন ছাত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের তুলনা করে কিছু প্রশ্ন করে। হৃদয় মণ্ডল সেগুলোর জবাব দেন।ক্লাসের এক ছাত্র ওই আলোচনা মোবাইলে রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। দুদিন পর কিছু ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন মিলে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
ওই রাতেই স্কুলের অফিস সহকারী আসাদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করলে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে, যা নানামুখী আলোচনার জন্ম দেয়।শিক্ষাবিদ, অধিকারকর্মী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এর প্রতিবাদে সরব হয়।২৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করেন হৃদয়, তা নাকচ করা হয়। এরপর সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতও তার জামিন নাকচ করে।