কুষ্টিয়ায় তিনজনের গুলির ঘটনায় অভিযুক্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন রায় রবিবার সকালে খুলনা থেকে বাসে করে কুষ্টিয়ায় এসেছেন। এ সময় তিনি তার সাথে দুটি সরকারী পিস্তল এবং ১২ টি বুলেট নিয়ে এসেছিলেন। তারপরে তিনি একে একে তিনজনকে গুলি করেন।
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) ফরহাদ হোসেন খান বলেছেন, এএসআই সৌমেন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ জাতীয় তথ্য দিয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারী কাজ বাদে কারও দায়িত্বের ক্ষেত্র থেকে পিস্তল বের করার কোনও নিয়ম নেই।
আজ সকাল ১১ টার দিকে নগরীর পিটিআই রোডের সামনের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের একটি তিনতলা ভবনের সামনে গুলিবিদ্ধ হন আসমা খাতুন ও তার ছয় বছরের ছেলে রবিন এবং শাকিল। এ ঘটনায় পুলিশ আসমার স্বামী এএসআই সৌমেন রায়কে একটি পিস্তল সহ গ্রেপ্তার করেছে। সৌমেন খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত। তার বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আসপা গ্রামে।
জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন সৌমেন রায় জানান, শাকিলের সাথে তার স্ত্রী আসমার সম্পর্ক ছিল। এ জন্য তিনি স্ত্রীর উপর রাগ করেছিলেন। রবিবার সকালে তিনি খুলনা থেকে বাসে কুষ্টিয়ায় এসেছিলেন। এ সময় তিনি দুটি ম্যাগাজিনে তাঁর পিস্তল এবং ১২টি বুলেট নিয়ে এসেছিলেন।
সৌমেন পুলিশকে জানায়, তিনি রবিবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের বাবর আলী গেটে আসমার মায়ের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন। এর আগে রাতেই তিনি আসমাকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে কুষ্টিয়ায় আসতে বলেছিলেন। আসমা সকালে ছেলের সাথে খুলনায় যেতে অস্বীকার করে। আসমা তাকে বলেছিল তার সাথে সম্পর্ক না রাখতে, এমনকি শাকিলের সাথেও নয়। এ সময় তিনি শাকিলকে ফোন করে শহরের শুল্ক কোণে আসতে বলেছিলেন। এদিকে আসমা ছেলের সাথে রিকশায় করে কাস্টমস মোড়ে পৌঁছেছিল।
সৌমেনের মতে, তিনি সেখানে লড়াইয়ের সময় শাকিলকে প্রথমে গুলি করেছিলেন। তারপরে তিনি আসমাকে গুলি করেন। এ সময় শিশু রবিন পালাতে গেলে তাকেও গুলি করে। যখন একটি ম্যাগাজিন শট শেষ হয়, অন্য ম্যাগাজিন ব্যবহার করুন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি শট উদ্ধার করেছে। হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল এবং দুটি ম্যাগাজিনও জব্দ করা হয়েছে। রাতে তাকে কুষ্টিয়া ডিবি অফিসে রাখা হয়েছিল। সোমবার তাকে আদালতে তোলা হতে পারে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
আসমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আসমার আগেও দুটি বিয়ে হয়েছিল। রবিন তার দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান। পাঁচ বছর আগে তিনি এএসআই সৌমেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরিবারের অভিযোগ, সৌমেন বেশ কয়েক মাস ধরে আসমাকে নির্যাতন করেছিল।