ইসলাম কীভাবে সংরক্ষিত আছে তা অনেকেই আমরা জানি। তবে এটাও স্মরণ রাখা দরকার যে ইবলিসও অক্ষমভাবে বসে নেই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দীন পালন করব এটা সে মেনে নিতে পারবে না। সে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য প্রতিটা কৌশল ব্যবহার করে। দীনের বিকৃতি ঘটাতে না পারলে অন্যান্য কৌশলে মানুষকে দীনবিছিন্ন করে, তাদের মনে দীনের ব্যাপারে সংশয় ঢুকিয়ে দেয়। এ জন্য সে মুখ্যভাবে কয়েকটা এজেন্ডা দাঁড়া করিয়েছে:
১. ইসলামের মিথ্যা ছবি তৈরী করা / ইসলামোফোবিয়ার প্রচার
ইসলামের মূল নির্যাসকে পালটে ফেলা ইবলিসের বাহিনীর পক্ষে অসম্ভব। তাই তারা ইসলামের নির্যাসকে আড়ালে রাখার জন্য ইসলামের ব্যাপারে নানা ভুল তথ্য ছড়ায়। এ কাজে সে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে রাজনীতি, বিনোদন জগত ও মূলধারার গণমাধ্যমকে।
মিডিয়া মনিটরিং সেন্টারের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, মূলধারার মিডিয়া সংস্থাগুলো মুসলিমদের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন বিষয়েও মুসলিমবিরোধী বক্তব্য ছড়ায়। সেন্টারটি ২০১৮-২০২০ সালে ৪৮০০০টি অনলাইন নিবন্ধ এবং ৩৪টি ব্রিটিশ মিডিয়া সংস্থা ও ৩৮টি টেলিভিশন চ্যানেলের ৫৫০০টি ভিডিও ক্লিপ বিশ্লেষণ করে। তারা সেখানে প্রচুর ইসলামবিরোধী ও মুসলিমবিরোধী বক্তব্য পেয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলধারার মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত ৬০ শতাংশ নিবন্ধে মুসলিম ও ইসলামের নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এএফপি, রয়টার্স এবং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসও অপরাধীদের তালিকায় রয়েছে। স্পষ্টতই মূলধারার মিডিয়া সংস্থাগুলো এসব মিডিয়া সেন্টারের রিপোর্টগুলো অনেকসময় পরিবর্তন ছাড়াই প্রকাশ করে। এই রিপোর্টে আরো দেখানো হয়েছ, কীভাবে এসব নিউজ এজেন্সিগুলো বিভিন্ন অপরাধের কারণ হিসেবে মুসলিমদের দেখায়। যদিও সেগুলোর সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্কও না থাকে। সাত শতাংশ নিবন্ধে ইসলামের বিরুদ্ধে বক্রোক্তি ও মন্তব্য করা হয়েছে।
ভেবে দেখুন, ইসলামের ব্যাপারে এ ব্যাপক মিথ্যা উপস্থাপনের প্রভাব সমাজে কিরূপ হতে পারে? এসব মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডার কারণে দুর্বল মুসলিমরা ইসলাম থেকে আরো দূরে সরে যায়, আর সত্যান্বেষী অমুসলিমরা ইসলামের ধারেকাছেও ঘেঁষে না। কারণ তাদেরকে ভুল ইসলাম বারবার দেখানো হয়েছে। মানুষের মনস্তত্ত্ব এভাবেই কাজ করে। আমরা এমন সমাজে বসবাস করছি যেখানে প্রায় সবাই মিডিয়ার ওপর নির্ভরশীল। অধিকাংশ মানুষ এতটাই অলস হয়ে পড়েছে যে মিডিয়া তাদেরকে কি দেখাচ্ছে সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনাও করতে চায় না। আপনি একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলেই দেখবেন যে ইসলাম ও সন্ত্রাসবাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। বরং শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের একমাত্র পথ হচ্ছে ইসলামকে অনুসরণ করা।
مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَکَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ مَنۡ اَحۡیَاهَا فَکَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ لَقَدۡ جَآءَتۡهُمۡ رُسُلُنَا بِالۡبَیِّنٰتِ ۫ ثُمَّ اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنۡهُمۡ بَعۡدَ ذٰلِکَ فِی الۡاَرۡضِ لَمُسۡرِفُوۡنَ ﴿۳۲﴾
যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল। আর অবশ্যই তাদের নিকট আমার রাসুলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও এরপর জমিনে তাদের অনেকে অবশ্যই সীমালঙ্ঘনকারী। [সুরা মায়িদা : ৩২]
কখনো ভেবেছেন কেন সর্বদা ইসলামেই টার্গেট করা হয়? কারণ পুরো সিস্টেম কাজ করে বাতিল ও অনৈতিকতা নিয়ে। এ জন্য সিস্টেমের সবচেয়ে বড় হুমকি ইসলাম। কারণ ইসলাম হচ্ছে সত্য, মিথ্যার সবচেয়ে বড় হুমকিও সত্য। তাই ইসলাম স্বাভাবিকভাবেই সিস্টেমের টার্গেটে পরিণত হবে।
২. মুসলিম উম্মাহর ঐক্য বিনষ্ট করা
ইবলিস মুসলিমদের দুর্বল করতে চায়। এ কাজে তার সবচেয়ে শক্তিশালী ও কার্যকরী পরিকল্পনা হচ্ছে তাদের ঐক্য বিনষ্ট করা, তাদের একাকী করা। পশ্চিমকে শক্তিশালী ভাবার কারণ নেই। তাদের মধ্যে একতা আছে যা দিয়ে তারা পুরো সিসটেমের ওপর শাসন চালায়। এই একতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতিসংঘের মাধ্যমে।
প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ক্যাপিটলে স্টেট অফ দ্য ইউনিয়নে একটি ভাষণে বলেন,
What is at stake is more than one small country, it is a big idea — a new world order.
এ ছাড়া তিনি ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ভাষণে বলেন,
We have before us the opportunity to forge for ourselves and for future generations a new world order — a world where the rule of law, not the law of the jungle, governs the conduct of nations. When we are successful — and we will be — we have a real chance at this new world order, an order in which a credible United Nations can use its peacekeeping role to fulfill the promise and vision of the U.N.’s founders.
আপনি মুসলিম দেশগুলোর অবস্থার দিকে তাকালে দেখবেন তাদের সরকারের মধ্যে কোনো পারস্পরিক সহযোগিতা বা ঐক্য নেই। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন মুসলিম দেশে অন্যায়-অবিচার দেখতে পাচ্ছি আমরা। একটি দেশ বিপদে পড়লে অন্য দেশ চুপ থাকে। বরঞ্চ তারা কাফির দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে সাহায্যের জন্য। তারা কাফিরদের সাথে এমন সব বিষয়ে চুক্তি করে যা ইসলামের গণ্ডির বাইরে। এভাবে চূড়ান্ত অনৈক্য টের পাওয়া যায়। এ ছাড়া মুসলিম উম্মাহর ৭৩টি ভাগে বিভক্ত হওয়াও মুসলিমদের অনৈক্যের একটি বড় কারণ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন আমাদের। ইবলিস ও তার বাহিনীর যুগে যুগে মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রচেষ্টা চালানোর কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।
اِنَّ الَّذِیۡنَ فَرَّقُوۡا دِیۡنَهُمۡ وَ کَانُوۡا شِیَعًا لَّسۡتَ مِنۡهُمۡ فِیۡ شَیۡءٍ ؕ اِنَّمَاۤ اَمۡرُهُمۡ اِلَی اللّٰهِ ثُمَّ یُنَبِّئُهُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾
নিশ্চয় যারা তাদের দীনকে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং দল-উপদলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন ব্যাপারে তোমার দায়িত্ব নেই। তাদের বিষয়টি তো আল্লাহর নিকট। অতঃপর তারা যা করত, তিনি তাদেরকে সে বিষয়ে অবগত করবেন। [সুরা আনআম : ১৫৯]
وَ اعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰهِ جَمِیۡعًا وَّ لَا تَفَرَّقُوۡا
আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। [সুরা আলে ইমরান : ১০৩]
আপনার শত্রু কেবল মুসলিমদের মধ্যে বড় বড় ক্ষেত্রে বিভেদ সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হবে না, বরং সে ছোট ছোট ক্ষেত্রেও বিভেদ ঘটাতে চায়। অর্থাৎ পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় তারা। পরিবারের সম্পর্ক বিনষ্ট হয় যখন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ বিষয় যেমন নৈতিকতা ও বিভিন্ন ইসলামি বিষয়াদি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয় না। কিভাবেই বা হবে? পরিবারের সবাই ব্যস্ত থাকে ডিভাইস নিয়ে। কারো হাতে স্মার্টফোন, কারো হাতে ল্যাপটপ বা আইপ্যাড। এভাবে শিশুদের ইসলামি শিক্ষা থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। শেষ কবে আপনি সন্তানদের সাথে ইসলাম ও নৈতিকতা নিয়ে কথাবার্তা বলেছিলেন?
৩. মুসলিমদের অনর্থক বিষয়ে ব্যস্ত রাখা ও তাদেরকে দীনবিমুখ করা
ইবলিস মুসলিম উম্মাহর ঐক্যই শুধু ভাঙ্গে না, সে তাদেরকে অনর্থক কাজে সর্বদা ব্যতিব্যস্ত করে রাখে যেন তারা দীনের প্রতি তাদের সময় ব্যয় করতে না পারে। কারণ দীনের প্রতি মহব্বতওয়ালা ব্যক্তিরা সর্বদা চাইবে দীনকে আল্লাহর জমিনে প্রতিষ্ঠিত করতে। আজ আমাদের যুবকরা ঘুমিয়ে আছে, অন্ধের মতো পশ্চিমাদের অনুসরণ করছে। যদ্দরুণ মুসলিমরা দুর্বল হয়ে পড়ছে দিনদিন। সমাজের নীতি-নৈতিকতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মুসলিমরা আজ পদে পদে পশ্চিমা সংস্কৃতি ও রীতিনীতিকে অনুসরণ করছে। যেমন, সম্প্রতি সৌদি আরবে হ্যালোউইন উৎসব পালন করা হয়েছে ভিন্ন নামে (হরর উইকএন্ড)। হ্যালোউইনের শেকড় খুঁড়তে গেলে সরাসরি শয়তানপূজার সাথে সম্পর্ক পাওয়া যায়। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্যাটানিক কসটিউম পরে যেমন ডাইনি, শয়তান ও অন্যান্য খারাপ চরিত্রের। শয়তানের প্রতি মিষ্টি উৎসর্গ করা হয়। এভাবে এই উৎসবে সরাসরি শয়তানেরই উপাসনা করা হয়। এই আয়োজনে মানুষ কোনো মূর্তির পূজা করে না, বরং সরাসরি শয়তানেরই পূজা করে, তার উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবিরা যে পূণ্যভূমিকে শিরক ও কুফরমুক্ত করার জন্য, তাওহিদ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিলেন সেই ভূমিতেই শিরক ও কুফরকে ফিরিয়ে আনার অনুমতি ও প্রচারণা চালাচ্ছে সৌদি সরকার।
মিউজিক হল শয়তানের অন্যতম শক্তিশালী অস্ত্র। আধুনিক বিশ্বে এর প্রধান প্রবক্তারা হচ্ছে বিভিন্ন মিউজিশিয়ানরা যারা তরুণদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সম্প্রতি সৌদি আরবে বিশ্বের বিভিন্ন মিউজিশিয়ানদের কিছু দিন আগে রিয়াদ সিজন নামক একটি মেগা ইভেন্টে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই শয়তানি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে ১ লাখ ৮০ হাজার মুসলিম। অথচ সেই বছর অর্থাৎ করোনাকালীন সময়ে মাত্র ৬০ হাজার ভ্যাকসিনেটেড হাজিকে হজের অনুমতি দেওয়া হয়।
১ লাখ ৮০ হাজার। সংখ্যাটার বিশালত্ব কল্পনা করে দেখুন। লাখ লাখ মুসলিম নারী-পুরুষ মক্কার অদূরে শয়তানের সুরে নাচছে, গাইছে আর পার্টি করছে। অথচ এই মক্কাতেই তাদের হজ পালনের কথা ছিল। তারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের জন্মস্থানের, কুরআন নাজিলের স্থানের এত নিকটে শয়তানের উপাসনা করে চলেছে। এখানেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবিরা দিনের পর দিন শয়তানের চক্রান্তের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। কিন্তু এভাবেই আজ শয়তানের পরিকল্পনা মাকড়সার জালের মতো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
মুসলিমরা তাদের রোল মডেল হিসেবে অশ্লীলতা প্রোমোটকারীদের গ্রহণ করছে। মুসলিম যুবকদের আর ইসলামের প্রতি মনোযোগ নেই। তারা দিনরাত সোশ্যাল মিডিয়া ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। মানুষকে বিজ্ঞান ও জ্ঞানের নামে বিভিন্ন মিথ্যা ও সেকুলার তত্ত্ব গেলানো হচ্ছে। যুবকরাও বিনাপ্রশ্নে সেগুলো গ্রহণ করছে। তারা মিউজিক, মাদক ও গেইমসের ভয়ানক নেশায় চরমভাবে আসক্ত। মানুষ প্রবৃত্তিকে ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে, এই বস্তুবাদী দুনিয়া তাদের চিন্তাজগতের পুরোটা জুড়ে থাকে। তারা ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াবি জীবনকে চিরস্থায় মনে করছে। অথচ দুনিয়ার জীবন মরীচিকা ব্যতীত কিছু নয়।
এভাবে ইবলিস ও তার দলবল মুসলিম সমাজে তাদের কুঠারাঘাত হেনেছে। ফলে মানুষ প্রকৃত সফলতার পথ থেকে ছিটকে পড়ছে। আলহামদুলিল্লাহ! এখনো অনেক মুসলিম দৃঢ় ইমান নিয়ে সকল দুনিয়াবি ফিতনার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত কঠোরহস্তে লড়াই করছেন। শয়তানের চক্রান্ত তাদের কাবু করতে পারে না। আমরা এ গ্রন্থে শয়তানের নানা চক্রান্ত নিয়ে আলোচনা করেছি, যেন ঘুমন্ত উম্মাহ তার চক্রান্তের বাস্তবতা সম্পর্কে জানতে পারেন, গাফিলতির ঘুম থেকে জেগে উঠতে পারেন। যেহেতু কিয়ামত সন্নিকটে, তাই শয়তানের পথে পা দেওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।
সাওবান রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
” يُوشِكُ الأُمَمُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمْ كَمَا تَدَاعَى الأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا ” . فَقَالَ قَائِلٌ وَمِنْ قِلَّةٍ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ قَالَ ” بَلْ أَنْتُمْ يَوْمَئِذٍ كَثِيرٌ وَلَكِنَّكُمْ غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السَّيْلِ وَلَيَنْزِعَنَّ اللَّهُ مِنْ صُدُورِ عَدُوِّكُمُ الْمَهَابَةَ مِنْكُمْ وَلَيَقْذِفَنَّ اللَّهُ فِي قُلُوبِكُمُ الْوَهَنَ ” . فَقَالَ قَائِلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْوَهَنُ قَالَ ” حُبُّ الدُّنْيَا وَكَرَاهِيَةُ الْمَوْتِ ” .
অদূর ভবিষ্যতে অন্য জাতির লোকেরা তোমাদের ওপর আক্রমণের জন্য একে অপরকে জড়ো করবে, যেভাবে মানুষ খাবার খাওয়ার জন্য অন্যদের ডাকে।
তখন জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেঃ আমাদের সংখ্যা কি তখন কম হবে?
তিনি বলেনঃ না, বরং সে সময় তোমরা সংখ্যায় অধিক হবে। কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে সমুদ্রের ফেনার মত। আল্লাহ্ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হতে তোমাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি দূর করে দেবেন এবং তোমাদের হৃদয়ে দুর্বলতার (ওয়াহন) সৃষ্টি করে দেবেন।
তখন জনৈক সাহাবী বলেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! ওয়াহন কি?
তিনি বলেনঃ দুনিয়ার মহব্বত ও মুত্যুকে ভয় করা।[১]
আজকের মুসলিমদের অবস্থা দেখলে তাদের ঐক্যের দৈন্যদশা উপলব্ধি করবেন। দোষটা আমাদেরই। ইসলামকে যেভাবে পালন করা উচিত সেভাবে পালন করলে আজ আমাদের এরকম শোচনীয় অবস্থা হতো না। আমরা নিজেরা জেগে উঠলে, নিজেদের সংশোধন করলে ইবলিস আর তার বাহিনীর আমাদের সামনে টেকার কোনো সম্ভাবনা নেই।
[১] সুনানু আবু দাউদ : ৪২৯৭