রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আগে শেষ মুহূর্তে ইন্দোনেশিয়ার জলসীমা ত্যাগ করতে পেরেছে চট্টগ্রামমুখী আরও দুই জাহাজ। এই দুই জাহাজে ১ কোটি ৫৫ লাখ লিটার পাম তেল রয়েছে। এ নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের আগের দিন তিন জাহাজে করে আনা ২ কোটি ৮৬ লাখ লিটার পাম তেল আসছে দেশে।
গত ২৮ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। নিষেধাজ্ঞার সময় রপ্তানি করায় দুটি জাহাজ আটকও করে দেশটির নৌবাহিনী। এর একটি ছিল ভারতমুখী। তবে বাংলাদেশের কোনো জাহাজ দেশটির জলসীমায় আটকে থাকার খবর পাওয়া যায়নি।
জাহাজ চলাচল পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মেরিন ট্রাফিক ও শিপিং এজেন্ট সূত্রে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের কয়েক ঘণ্টা আগে ইন্দোনেশিয়ার দুমাই বন্দর থেকে ‘এমটি সানজিন ৩০২৫’ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বন্দর জলসীমায় এসে পৌঁছেছে। জাহাজটিতে ১ কোটি ২২ লাখ লিটার পাম তেল রয়েছে। এমটি সানজিন জাহাজে করে পাম তেল আমদানি করেছে চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপ।
জাহাজটির স্থানীয় প্রতিনিধি বেরিং সি লাইনসের ব্যবস্থাপক আহমদ মইনুদ্দিন বলেন, শেষ মুহূর্তে জাহাজটি ইন্দোনেশিয়ার জলসীমা ত্যাগ করায় চট্টগ্রামে আসতে পেরেছে। জাহাজটি থেকে এরই মধ্যে পাম তেল খালাস শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের তিন দিন আগে ইন্দোনেশিয়া ছেড়ে আসা আরেকটি জাহাজও চট্টগ্রাম বন্দরের পথে রয়েছে। ‘এমটি অউ তৌরুজ’ নামের জাহাজটি এখন ভারতের কৃষ্ণপত্তনাম বন্দরে অবস্থান করছে। সেখানে কিছু পাম তেল খালাস করে শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এই জাহাজে প্রায় ৩৩ লাখ লিটার পাম তেল আমদানি করেছে বহুজাতিক সংস্থা ইউনিলিভার। মূলত নিজেদের প্রসাধন তৈরিতে ব্যবহার হবে এই পাম তেল।
এই দুটি জাহাজ ছাড়াও ‘এমটি সুমাত্রা পাম’ নামের একটি জাহাজ ১ কোটি ৩১ লাখ লিটার পাম তেল নিয়ে চট্টগ্রামে আসছে আগামীকাল শুক্রবার। টি কে গ্রুপ এই তেল আমদানি করেছে। ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের অন্তত ২০ হাজার টন পাম তেল আমদানি আটকে গেছে বলে আমদানিকারক সূত্রে জানা গেছে। নিষেধাজ্ঞার আগে এই তেল আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছিল। তবে কাদের আমদানি করা পাম তেল আটকে গেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে নতুন করে ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম তেল আমদানির সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে বিকল্প দেশ মালয়েশিয়া থেকেই আমদানি করতে হবে। দেশে সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষ পাম তেলের প্রধান ক্রেতা। মূলত খোলা আকারে বিক্রি হয় এ তেল। এ ছাড়া হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাবার তৈরিতে পাম তেল ব্যবহার হয়। খাদ্যপণ্য ও প্রসাধনী তৈরির কোম্পানিগুলোও পাম তেল ব্যবহার করে।
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৩ লাখ টন পাম তেল আমদানি হয়। যার ৯০ শতাংশই আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। মালয়েশিয়া থেকে আমদানি হয় বাকি ১০ শতাংশ। মালয়েশিয়ার চেয়ে তুলনামূলক কম দামের কারণেই ইন্দোনেশিয়া থেকে বেশি পাম তেল আমদানি করা হয়।