আমাদের অতি পরিচিত একটি শব্দ হলো ইনসুলিন।ডায়াবেটিস রোগী ইনসুলিন নেয়- ইনসুলিন সম্পর্কে আমাদের বেশিরভাগের জ্ঞান এতটুকুই।এই লেখাটি পড়ার পর আশা করি ইনসুলিনের ব্যাপারে আমাদের ধারণা অনেকটা স্পষ্ট হবে।
ইনসুলিন মূলত একটি হরমোন যেটি অগ্ন্যাশয় থেকে ক্ষরিত হয়।আরো নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে ইনসুলিন একটি পলিপেপটাইড হরমোন যেখানে এমিনো এসিডের দুইটি চেইন(A ও B) থাকে।এই চেইন দুটি ডাইসালফাইড ব্রিজ দ্বারা যুক্ত থাকে।এখানে ৫১টি এমিনো এসিড থাকে যার ২১টি থাকে A চেইনে এবং ৩০টি থাকে B চেইনে।ইনসুলিনের মূল কাজ হলো রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমানো।ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে গ্লুকোজ যেহেতু বেড়ে যায় তাই তাদেরকে ইনসুলিন দেয়া হয়।এতে করে ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে থাকে।আমাদের শরীরে ইনসুলিন নির্ভর টিস্যু হলো এডিপোজ টিস্যু ও স্কেলেটাল টিস্যু।
ইনসুলিনের কাজের পরিসর অনেক বড়।এটি শর্করা আমিষ চর্বি- সবকিছুরই বিপাকে অংশগ্রহণ করে থাকে।
-শর্করা বিপাকের ক্ষেত্রে ইনসুলিন গ্লাইকোলাইসিস, গ্লাইকোজেনেসিস, গ্লাইকোজেনোলাইসিস, গ্লুকোনিওজেনেসিস এইসব প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়।
-চর্বি বিপাক ইনসুলিন লাইপোজেনেসিস, গ্লিসারল সিনথেসিস, লাইপোলাইসিস, কিটোজেনেসিস এর মাধ্যমে সাহায্য করে থাকে।
-আমিষ বিপাকের ক্ষেত্রে ইনসুলিন প্রোটিনের ভাঙ্গন কমায়, প্রোটিন সিনথেসিস বাড়ায়।
ইনসুলিনের অভাবে যে রোগগুলো হতে পারে-
*পলিইউরিয়া(মূত্র তৈরী বেড়ে যাওয়া)
*পলিডিপসিয়া(তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া)
*পলিফ্যাগিয়া(ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া)
*ওজন কমে যাওয়া
*দূর্বলতা
*হাইপারগ্লাইসেমিয়া(গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া)
*গ্লাইকোসইউরিয়া
*কিটোসিস
*এসিডোসিস
*কোমা
এছাড়াও নিউরোপ্যাথি, রেটিনোপ্যাথি, নেফ্রোপ্যাথিও হতে পারে।
©দীপা সিকদার জ্যোতি