প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন-মানে পরিবর্তন দেখা গেছে ফরিদপুরে।
সরেজমিনে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার স্বপ্ননগর ও নগরকান্দার আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে এখন বদলেছে ছিন্নমূল মানুষের যাপিত জীবনের। তারা এখন বসবাস করছে রঙিন টিন আর পাকা দেয়ালের আধপাকা বাড়িতে। সেই বাড়িতেই করছে শাক-সবজির আবাদ। কেউ করছে হাঁস-মুরগি-ছাগল-গরু পালন। সন্তানদের পাঠাচ্ছে স্কুলে। বসতির দুশ্চিন্তা ছেড়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজ করে এগিয়ে নিচ্ছে সংসার। সংসারে এসেছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা গঠন করেছে সমবায় সমিতি। নিয়মিত নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ। অনেকের একাডেমিক শিক্ষা না থাকলেও নানা প্রশিক্ষণে তারা হয়ে উঠছেন স্বশিক্ষিত। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি এগিয়ে যাচ্ছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কাশেম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জেলায় হতদরিদ্র যাদের বসবাসের কোনো ঠিকানা ছিল না, তাদের স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। এটা সত্যিই বিস্ময়কর। ওই মানুষগুলো তাদের ভাগ্যে চাকা নতুনভাবে ঘুরাতে শুরু করেছে।
ফরিদপুর জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তামলিমা আলি জানান, তৃতীয় দফায় সব মিলেয়ে প্রায় ৫ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হয়েছে। কিছু কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যোগ্যদের চিহ্নিত করে ঘর দেওয়া হয়েছে।
ছবেদা বেগম, লতিফা আক্তার, হাফিজুর রহমানসহ আরো অনেকেই বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ভাবিনি নিজের ভালো একটা বসবাসের ঠিকানা হবে, এখন সেটি হয়েছে, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে পারছি, নিজের হাঁস-মুরগি পালনসহ নানা কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, সত্যই এটা স্বপ্নের। এমনটি হবে ভাবিনি, সৃষ্টিকর্তার কাছে হাসিনার জন্য দোয়া করি।
বোয়ালমারী ইউএনও রেজাউল করিম ও নগরকান্দার ইউএনও জেতী প্রু জানালেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের জীবন-মান উন্নয়নে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে, আমরা সরকারে পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করছি, এ প্রকল্প পৃথিবীতে একটি রোলমডেল, কারণ এভাবে কোনো দেশে অশ্রয়হীনদের জন্য সরকারিভাবে নিরাপদ ছাদ তৈরির ব্যবস্থা হয়নি।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছি। ফরিদপুরে আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন বেশ কয়েকটি স্থানে শিশুদের খেলার মাঠ, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা,মন্দির তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের বাসিন্দাদের সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ এবং ঋণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’