ডিয়েগো ম্যারাডোনা ৩৬ বছর আগে আর্জেন্টিনাকে এনে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ। সঙ্গে ছিলেন হোর্হে বুরুচাগা, অস্কার রুগেরি, সের্হিও বাতিস্তা, হোর্হে ভালদানো, নেরি পম্পিডুরা। সেই বিশ্বকাপের পর ম্যারাডোনার সঙ্গে আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন ক্লদিও ক্যানিজিয়া, সের্হিও গয়কোচিয়া, গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা, দিয়েগো সিমেওনেরা। এরপর এসেছেন আরিয়েল ওর্তেগা, ডিয়েগো সিমিওনে, হার্নান ক্রেসপো, ক্লদিও লোপেজ, রবার্তো আয়ালা, হাভিয়ের জেনেত্তি, রবার্তো সেনসিনি, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরন, মার্সেলো গায়ার্দো, পাবলো আইমার, হুয়ান পাবলো সোরিনরা।
কিন্তু ম্যারাডোনার কীর্তির আর পুনরাবৃত্তি হয়নি। ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপের পর কেটে গেছে ৩৬ বছর। বাতিস্তুতা, ক্রেসপো, ভেরন, আইমার, সিমিওনে, সোরিন, ওর্তেগারা খেলেছেন বেশ কয়েকটি বিশ্বকাপ। প্রতিবারই শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে বিশ্বকাপ খেলতে গেছে আর্জেন্টিনা, কিন্তু সফল হয়নি। এমনকি লিওনেল মেসিও এক এক করে চারটি বিশ্বকাপ খেলেও ব্যর্থ। বিশ্বকাপটা যেন অভিশপ্ত এক বিষয়েই পরিণত হয়েছিল আর্জেন্টিনার জন্য। কত পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর চেষ্টা নিমেষেই পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে। সেই বিশ্বকাপটাই অবশেষে মেসির হাত দিয়ে আর্জেন্টিনা পেল তিন যুগ পেরিয়ে।
বাতিস্তুতা কাঁদছেন। আনন্দের কান্না। আর্জেন্টিনার হয়ে কিছুদিন আগেও ছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। বিশ্বকাপ জয়ের দীর্ঘ প্রচেষ্টার সাক্ষী, লড়াইয়ের সঙ্গীও। কাল লুসাইল স্টেডিয়ামে ইতিহাসের সেরা ফাইনালে আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত বিশ্বজয়ী। আবেগ, রোমাঞ্চ, উত্তেজনা—সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া এই ফাইনালের পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি তিনটি বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে ৯ গোল করা বাতিস্তুতা।
বিশ্বকাপে বিইএন স্পোর্টস চ্যানেলের বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন বাতিস্তুতা। আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ের মুহূর্তে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেবল একটা কথাই বলতে পারলেন, ‘দুর্দান্ত এই জয়। আমরা সবাই কত কষ্টই না করেছি এই জয় দেখার জন্য। আমি মেসির জন্য আনন্দিত। গোটা দেশের জন্যই আনন্দিত। আমি কথা বলতে পারছি না। দুঃখিত, আমি কথা বলতে পারছি না। সবার কাছে ক্ষমা চাই।’