আম আবিস্কারের কাহিনি সমন্ধে জানতে পড়ুন।
আম অমৃত ফল নামে পরিচিত। কেউ কেউ একে ফলের রাজা বলেও অভিহিত করে থাকেন। আমের ইংরেজি নাম “ম্যাঙ্গো”। এটি দক্ষিণ ভারতের মাঙ্গা শব্দ থেকে এসেছে বলে অনুমান করা হয়। তবে কি আমের জন্মভূমি প্রাচীন ভারতবর্ষে?
উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে কিন্তু আমের জন্মভূমি ভারতবর্ষ নয়, মালয় দ্বীপ পুঞ্জে। আমকে তাঁরা নামকরণ করেছেন ম্যাঙ্গোফেরা ইন্ডিকা। ভারতবর্ষের আমের কথা প্রথম উল্লেখ দেখা যায়, আলেকজান্ডারের দিনলিপির পাতায়। খ্রীস্টপূর্ব ৩২৭ অব্দে তিনি নাকি সিন্ধু উপত্যকায় গাছে গাছে পাকা আম ঝুলে থাকতে দেখেছিলেন। পরবর্তীকালে আমের স্বাদ ও গুণাগুণের কথা জানতে পেরেছেন চীন পর্যটক হিউয়েন সাঙ ৬৪০ খ্রীস্টাব্দে। সেই সময় তিনি আমকে বিদেশে রপ্তানি করার কথা ভাবেন এবং তৎকালীন রাজাকে পরামর্শ দেন।
তাঁরই পরিকল্পনায় পর্তুগাল, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, মালয়, জাভা এবং ইন্দোনেশিয়ায় আম রপ্তানি শুরু হয়। ফলে আম চাষের প্রসার ঘটতে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ফিলিপাইন দীপপুঞ্জ, ফিলিপাইন, সুমাত্রা, জাভা, অস্ট্রেলিয়া, বক্ষ্মদেশ, আন্দামান, মিশর ও ব্রেজিল প্রভৃতি দেশে আম জন্মায়। তবে আজও আম চাষের বাংলাদেশের স্থান প্রথম সারির দিকে। আম রপ্তানি করে বিদেশি মুদ্রাও রচুর পরিমাণে অর্জন করা হয়। আম দুই ধরণের হয় মূলত। যথাঃ
১। আঁটির আম
২। কলমের আম।
কলমী গাছের আম চেনার উপায় হলো, এই আমগুলোর আঁটি ছোট, আঁশশূণ্য, মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়ে থাকে।
আমের রাজা ল্যাংড়া। ল্যাংড়ারও আবার বিভিন্ন জাত আছে। বেনারসের ল্যাংড়াই সবচেয়ে ভাল। তবে আকারের দিক থেকে ফজলী আমের জুড়ি মেলা ভার। রাজশাহী ও দিনাজপুরে এদের ফলন সবচেয়ে বেশি।
গবেষকদের মতে, সম্রাট আকবর বিহারের দারভাঙ্গা অঞ্চলে সুন্দর একটি বাগান তৈরি করেছিলেন। তার নাম দিয়েছিলেন লাম-বাগ। সেখানে কয়েকটি ফজলী আমের চারাও লাগিয়েছিলেন। আইন-ই-আকবরী বইতে এসব তথ্যের উল্লেখ ফজল-এর নাম অনুসারে আমটির এরকম নাম দেওয়া হয়।
আমের খাদ্যপ্রাণ সমন্ধে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মত হল- কাঁচা আমের জলীয় পদার্থ, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং লৌহ জাতীয় পদার্থ প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান। কাঁচা আম অপেক্ষা পাকূ আমই শরীরের পক্ষে বেশি উপকারী। প্লীহা, ক্ষয়রোগ, ও বাতের পক্ষে আম খুব উপকারী। শুকনো আমও উপকারের দিক থেকে পিছিয়ে নেই।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া