আমাদের রক্ত দুইটি ভাগে বিভক্ত- রক্তরস এবং রক্তকণিকা।রক্তকণিকা আবার তিন ধরনের।লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা।আজ লোহিত রক্তকণিকা নিয়ে বিস্তারিত থাকছে।
লোহিত রক্তকণিকা দ্বিঅবতল, গোলাকার।এতে কোনো নিউক্লিয়াস থাকে না।এখানে পানি থাকে ৬৫% এবং কঠিন উপাদান থাকে ৩৫%। কঠিন উপাদানের মধ্যে রয়েছে হিমোগ্লোবিন যা ৩৩% পরিমাণে থাকে।আর অন্যান্য পদার্থ থাকে ০২%।
প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষে আরবিসি বা রেড ব্লাড সেলের সংখ্যা ৪.৯-৫.৫ মিলিয়ন/ঘন মিলিমিটার রক্ত।প্রাপ্তবয়স্ক নারীতে এর সংখ্যা ৪.৪-৫ মিলিয়ন আর শিশুদেহে থাকে ৬-৭ মিলিয়ন।
লোহিত রক্তকণিকা তৈরী হওয়ার প্রক্রিয়াকে বলে Erythropoiesis. ভ্রূণদেহে তৃতীয় সপ্তাহে এটি শুরু হয়।
জন্মের আগে কুসুমথলি, যকৃত, প্লীহা, লাল অস্থিমজ্জা- এসব স্থান হতে লোহিত রক্তকণিকা তৈরী হয়। জন্মের পর ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আরবিসি তৈরী হয় লাল অস্থিমজ্জায়।আর ২০ বছর বয়সের পর লাল অস্থিমজ্জা, স্টার্নাম, পর্শুকা, হিউমেরাস, ফিমার এইসব স্থান থেকে লোহিত রক্তকণিকা তৈরী হয়।
লোহিত রক্তকণিকা তৈরীতে ম্যাচুরেশন ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করে ভিটামিন বি১২ আর ফলিক এসিড।ভিটামিন বি১২ এক্ষেত্রে কোএনজাইম এবং ফলিক এসিড অনুঘটক হিসাবে কাজ করে।
লোহিত রক্তকণিকা আকারে গোলাকার। এর পুরুত্ব চারপাশে ২.৫ মাইক্রোমিটার এবং কেন্দ্রে ১ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম।এর সার্ফেস এরিয়া ১৪০ বর্গ মাইক্রোমিটার। আয়তন ৯০-৯৫ ঘন মাইক্রোমিটার।আরবিসি সাধারণত ১২০ দিন বাঁচে।আর প্রতিটি আরবিসি ২৯ পিকোগ্রাম হিমোগ্লোবিন ধারণ করে।
আরবিসির মূল কাজ হলো ফুসফুস থেকে প্রতিটি কোষে অক্সিজেন নিয়ে যাওয়া আর কোষ থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড ফুসফুসে নিয়ে আসা।এছাড়াও আরবিসি এসিড ক্ষার সাম্য রক্ষায় কাজ করে,রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে কাজ করে, আয়নিক ভারসাম্য রক্ষা করে।
©দীপা সিকদার জ্যোতি