কোটি কোটি কোষ নিয়ে গঠিত আমাদের এই শরীর।আর কোষেরই একটি অংশ হলো কোষের পর্দা তথা কোষঝিল্লী।আজকের আলোচনায় কোষঝিল্লীর গঠন ও কাজ নিয়ে বলা হবে।
আমাদের প্রতিটি কোষের বাইরের পৃষ্ঠ একটি পাতলা আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে যা কোষের সাইটোপ্লাজমকে বাহ্যিক পরিবেশ থেকে পৃথক করে রাখে।এটাই হলো কোষঝিল্লী।একে প্লাজমাঝিল্লী, কোষপর্দা বা প্লাজমালেমাও বলা হয়।কোষঝিল্লী সাধারণত ৭.৫-১০ ন্যানোমিটার পুরু হয়ে থাকে।কোষঝিল্লীর মূল উপাদান হলো প্রোটিন,লিপিড ও কার্বোহাইড্রেট।এখানে প্রোটিন ৫৫%, লিপিড ৪২% ও কার্বোহাইড্রেট ৩% পরিমাণে থাকে।
কোষঝিল্লীতে মূলত তিনটি জিনিস থাকে-
১.মেমব্রেন লিপিড
২.মেমব্রেন প্রোটিন
৩.মেমব্রেন কার্বোহাইড্রেট
মেমব্রেন লিপিড মূলত ফসফোলিপিড এর সমন্বয়।এগুলো পানিতে দ্রবণীয়।এই লিপিডগুলোর মূলত দুইটি প্রান্ত থাকে।একটি পানিতে দ্রবণীয় লেজ ও পানিতে অদ্রবণীয় মাথা।মাথাগুলো থাকে বাইরের দিকে আর লেজগুলো থাকে ভেতরের দিকে।
মেমব্রেন প্রোটিনগুলো বরফ খন্ডের মত ভাসমান।এক্ষেত্রে সাধারণত গ্লাইকোপ্রোটিন মেমব্রেন প্রোটিন হিসেবে কাজ করে।আর এরা দুই ধরনের হয়ে থাকে:
-ইন্টিগ্রাল প্রোটিন
-পেরিফেরাল প্রোটিন
মেমব্রেন কার্বোহাইড্রেটগুলো গ্লাইকোপ্রোটিন নামক প্রোটিন এবং গ্লাইকোলিপিড নামক লিপিডের সমন্বয়ে তৈরী।
কোষঝিল্লীর কাজ:
১.কোষের আকার ও আকৃতি বজায় রাখে।
২.এক কোষ হতে অন্য কোষে নানা দ্রব্যাদি পরিবহন করে থাকে।
৩.পুষ্টি শোষণ করা।
৪.ক্ষতিকর দ্রব্য নিঃসরণ করা।
৫.কোষকে রক্ষা করে।
৬.একটি কোষকে অন্য কোষ থেকে পৃথক করে রাখে।
৭.হরমোন এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের ক্ষেত্রে রিসেপ্টর সাইট হিসেবে কাজ করে।
৮.রেস্টিং মেমব্রেন পটেনশিয়াল রক্ষা করে।
©দীপা সিকদার জ্যোতি