‘আফনে কেডা। আফনে কি আমার আত্মীয়। আফনে আমারে ফোন দেন কেরে। ফোন না দিয়া ফেস টু ফেস কতা কন। আফনে আমার লগে কতা না কইয়া ইউএনও’র লগে কতা কন। আমি ইউএনও’র লগে বুজুম। আফনে আমারে আর ফোন দিয়েন না।
আফনে ফোন দেঅনের উদ্দিশ্য কিতা। আমি দোকান করলে আফনের সমস্যা কিতা’।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এই প্রতিবেদক একথা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার নুরপুর গ্রাম। আল-আমিন। সম্প্রতি নির্বাসন থেকে ফিরে আসা এই ব্যক্তি যখন সরকারী জায়গায় দোকান বানানোর অভিযোগ এনেছিলেন, তখন তিনি বিষয়টি অনুসন্ধান করার জন্য ফোন করেছিলেন, তখন তিনি এই কথাটি বলেছিলেন।
বৃহস্পতিবার নূরপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা রাসেল মাহমুদ আল-আমিনের বিরুদ্ধে বিজয়নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সরকারী স্থানে বাড়িঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ার সময় শুল্কের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো। আতিকুর রহমান বলেন, ভূমি আধিকারিকের দায়ের করা সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ জিডি (জেনারেল ডায়েরি) হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, আল-আমিন উপজেলার চম্পকনগর বাজারে পুরান ৩৩৩ টি ডাগ এবং পুরাতন ৩৩৩ দাগ ও নতুন ১৪৫-৪৬ দাগের খাস খতিয়ানের জায়গায় দোকান নির্মাণ শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে সংশ্লিষ্টরা আল-আমিনকে দোকান তৈরি না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তবে তিনি তা শোনেন নি এবং দোকানপাট চালিয়ে যান। এমনকি তিনি বিভিন্নভাবে হুমকিও দিতেন। সাইটে আধা-সমাপ্ত ঘর নির্মাণের কাজ এখনও চলছে।
বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছিলেন, পাঁচ বছর আগেও এক ব্যক্তি ওই এলাকায় একটি বাড়ি তৈরি করতে চেয়েছিল। প্রশাসনের বাধার কারণে সে সময় এটি সম্ভব ছিল না। এখন আল-আমিন সেখানে জোর করে একটি বাড়ি তৈরি করছেন। যদি এখানে একটি বাড়ি নির্মিত হয়, তবে আশেপাশে আরও সরকারি শূন্যপদ দখলের সম্ভাবনা থাকবে। ‘
চম্পকনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো। হামিদুল হক বলেন, ‘মার্কেট কমিটির লোকেরা বলছেন জায়গাটি সরকারের। সরকার যে জায়গাটি জিতেছিল, সেই জায়গা নিয়ে বাজার কমিটির সাথে একটি মামলা হয়েছিল। যারা ঘর তৈরি করছেন তাদের আমি বললাম নথি থাকলে তা ইউএনওর কাছে দেখাতে। কিন্তু তারা তা করেনি। হাউস বিল্ডিং এখনও চলছে। ‘
এদিকে, প্রথমবার ফোনটি ছেড়ে দেওয়ার পরে আল-আমিন নিজেই এই প্রতিবেদককে ফোন করেছিলেন। এ সময় কাউসার পরিচয় দিয়ে একজন ব্যক্তি বলেছিলেন যে তাদের কাছে এই জায়গার নথি রয়েছে। তিনি দাবি করেছিলেন যে কাগজে সেখানে ঘর তৈরি হচ্ছে।