ইরানে আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনসহ মোট চারটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।
সকাল ৭টায় সারা দেশে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত। প্রয়োজনে ভোট দানের সময় রাত ২টা পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। আগামীকাল শনিবার দুপুরের আগেই নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে।
এটা ইরানের ১৩তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন মোট ৫২৯ জন। এর মধ্যে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসাবে অনুমোদন পেয়েছিলেন সাতজন।
সংস্কারপন্থি ও মধ্যপন্থি প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। একেবারে শেষ সময়ে এসে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিন প্রার্থী। বুধবার সন্ধ্যায় ইরানের জনগণের উদ্দেশে লেখা এক বিবৃতিতে ইব্রাহিম রায়িসির প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সাবেক সুপ্রিম সিকিউরিটি কাউন্সিল সেক্রেটারি সাঈদ জালিলি।
দুইবারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রার্থী হননি বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। ২০১৩ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর কয়েক ঘণ্টা আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন অপর দুই প্রার্থী ইরানের জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার প্রধান ও সাবেক ইসপাহান গভর্নর মোহসেন মেহের আলীজাদে ও সাংসদ আলীরেজা যাকানি। মেহের আলীজাদে অপর সংস্কারপন্থি প্রার্থী আব্দুন নাসের হেম্মাতির প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনি লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এরপর রক্ষণশীল প্রার্থী আলীরেজা যাকানি অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ইব্রাহিম রায়িসির সমর্থনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান। তিনজন সরে দাঁড়ানোয় প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাত্র চারজন প্রার্থী। এর মধ্যে জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছেন বিচার বিভাগের প্রধান আয়াতুল্লাহ ইব্রাহিম রায়িসি।
করোনা মহামারির কারণে এবার ভোটার উপস্থিতি কম হবে বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিংয়ের জরিপ বলছে, ভোটার উপস্থিতি হতে পারে ৫০ শতাংশেরও কম। আর হার্ডলাইনার হিসাবে পরিচিত ফার্স নিউজ এজেন্সির জরিপে বলা হয়েছে, এ নির্বাচনে ৫৩ শতাংশ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।
নির্বাচনে ইরানি নাগরিকদের ব্যাপক হারে ভোটদানের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। নিজে খুব সকালে ভোট দেবে বলেও জানান তিনি। বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘শত্রুরা তার দেশের নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতি কমিয়ে দিয়ে ইরানকে সন্ত্রাসবাদের লালনভূমিতে পরিণত করতে চায়। কিন্তু ইরানি জনগণ সে ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না।’
খামেনি আরও বলেন, সব ক্ষেত্রে ইরানের ভবিষ্যৎ আগামী শুক্রবারের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের ওপর নির্ভর করছে। নিজেদের হাতে দেশের ভাগ্য গঠন করার সুযোগ পাচ্ছে দেশের জনগণ। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ মাত্রায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে।