অশ্বের ডান দিক থেকে অশ্বারোহণ করে না কেন?
এক সময় অশ্বই মানুষের যাতায়াতের সবচেয়ে বড় অবলম্বন ছিল। আরণ্যক সভ্যতার আমল থেকে অর্শের ব্যবহার দেখা যায়। রামায়ণ ও মহাভারতের যুগেও রথ চালনা, অশ্বের পিঠে চেপে মৃগয়ায় যাওয়া, অশ্বমেধ যজ্ঞ প্রভৃতিতে অশ্বের ব্যবহার ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে।
পরবর্তী কালে এমনকি মধ্যযুগেও অশ্বের বহু ব্যবহার লক্ষিত হয়েছে। মোঘল যুগেও যুদ্ধ ও যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে অশ্বের যথেষ্ট ব্যবহার ছিল। বর্তমানে যানবাহন ব্যবস্থার উন্নতি সাধনের ফলে অশ্বের ব্যবহার নেই বললেই চলে।
যুদ্ধাস্ত্রের উন্নতির ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে অশ্বের ব্যবহার উঠে গেছে। এক সময় ডাক- ব্যবস্থায়ও প্রচুর সংখ্যক ঘোড়ার ব্যবহার দেখা গেছে। আজ এখানেও ঘোড়া অনুপস্থিত। তবে রেসের মাঠে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিভাগে এখনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিছু কিছু ঘোড়ার ব্যবহার দেখা যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অশ্বারোহীরা অশ্বারোহণের সময় ডান দিক থেকে অশ্বারোহণ না করে বাঁদিক থেকে কেন করে?
আগেই বলা হয়েছে, একসময় যুদ্ধক্ষেত্রে ঘোরার ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশি। আর রাজা সেনাপতি থেকে শুরু করে সাধারণ সৈনিক পর্যন্ত সবার কোমরে একটি করে তরবারি ঝুলত। আর তা বাঁধা থাকতো বাঁ দিকে। কারণ প্রয়োজনের সময় দ্রুত ডান হাতে সেটিকে ঝট করে কোষ মুক্ত করে কাজ শুরু করে দিতে পারতেন। আর তরবারি থাকার জন্য ডান দিকে থেকে অর্থাৎ অশ্বারোহীর বাঁদিক থেকে অশ্বারোহনে অসুবিধা জনক। তাই অশ্বের বাঁ দিক অর্থাৎ অশ্বারোহীর ডানদিক থেকে অশ্বারোহনে যথেষ্ট সুবিধা। এখন অবশ্য অশ্বারোহীর কোমরে তরবারি থাকে না। তবু অশ্বের বাঁ দিক থেকে অশ্বারোহনের রীতিটি বজায় রয়ে গেছে।
তথ্য সংগ্রহে- মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।