একসময় ভদ্রলোক পাগলিটির হাত ধরে গাড়ির দিকে ইশারা করলো। বোঝা যাচ্ছে, তিনি গাড়ি উঠতে বলছেন। এই কথা বলার সাথেই পাগলি এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিল। উঠে দাঁড়িয়ে ঐ ভদ্রলোককে ধাক্কাতে শুরু করলো। আয়াতের ভ্রু কুঁচকে গেল। সে কিছুই বুঝতে পারলো না। তবুও কৌতূহলী দৃষ্টিতে ঘটনার সবটা দেখে যেতে লাগলো।
একপর্যায়ের পাগলিটি আইসক্রিমের বাটিটি ভদ্রলোকের দিকে ছুঁড়ে মারল। আইসক্রিম লেগে তার দামি কোর্টের অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে গেল। কিন্তু তিনি কিছুই বললেন না। তবুও তার দিকে ফিরে একটু হাসলেন।
তারপর ঐ অবস্থায়ই গাড়িতে উঠতে উদ্যত, এমন সময় আয়াতের ইচ্ছে হলো দৌড়ে তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করবে, আপনি কে? আর পাগল মহিলাকে দেখিয়ে বলবেন, ইনি আপনার কে হোন? আরো অনেক প্রশ্ন! যেগুলো তাকে এতদিন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে।সবগুলো এক নিঃশ্বাসে বলতে পারলে তার খুব শান্তি লাগতো।
কিন্তু কিসের জন্য যেন আয়াত রিক্সা থেকে নামতে গিয়েও দমে গেল। পাথরের মতো বসে থেকে শুধু নিষ্পলক দৃষ্টিতে ভদ্রলোকটির চলে যাওয়া দেখলো। কিছুই আর জানা হলো না।
গাড়িটি চলছে আপন গন্তব্যে। মধ্যবয়স্ক পাগলিটিও সেই গাড়ির দিকে অপলকে তাকিয়ে আছে। একি! সে চোখ মুছছে। মানে সে কাঁদছে? কিন্তু কেন?
আয়াতের সেটা কখনই আর জানা হবে না।
কিছু কিছু বিষয় রহস্যই থেকে যায়। অনেক খুঁজলেও সেসব রহস্যের সমাধান খুঁজে পাওয়া যায় না। সেগুলো অমীমাংসিতই থেকে যায়। তেমনিই অমীমাংসিত থেকে গিয়েছি আয়াতের সমস্ত প্রশ্নের সমাধান।
লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।