[৫]
গত ৩বছর ধরেই আয়াত পাগলিকে প্রতিনিয়ত দেখছে। তার খুব ইচ্ছে ছিল নিজের হাতে কিছু খাবার বানিয়ে তাকে খেতে দিবে। কিন্তু সেবার তিনি যেভাবে তার দিকে রক্তবর্ণ চক্ষু নিয়ে তাড়িয়ে এসেছিলেন। তাতেই তার এই ইচ্ছে পুরোটাই মরে গেছে।
সেই প্রথম দেখা থেকে এখন পর্যন্ত, আয়াত সকাল এবং দুপুরে যতবারই তাকে খেতে দেখেছে। ততবারই সে লক্ষ করেছে, উনি সবসময়ই ভালো খাবার দিয়ে উদরপূর্তি করেন।
এই বিষয়টা আয়াতকে খুব ভাবায়। এছাড়াও প্রত্যেক শীতে তার সাথে নতুন নতুন লেপ-কম্বল দেখা যায়। এগুলোর ব্যবস্থা কে করেন? কোনো পথচারী? সেটাও মনে হয় না। কেননা কংক্রিটের এই শহুরে মানুষগুলো নিজেদের নিয়ে খুব বেশি ব্যস্ত। তারা নিশ্চয়ই কোনো পাগল মহিলাকে নিয়ে এত আদিখ্যেতা করে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করবে না। কিন্তু কেউ তো ভাবে তার কথা।
আয়াত রাতে কখনই বের হয় না। তাই উনি রাতে কী খায় সেটা কখনো দেখতে পারেনি। কিন্তু তার সকাল এবং দুপুরের খাবারগুলো নিয়ে আয়াত অনেক ভেবেছে। নিয়ম করে এত ভালো খাবার কে দিয়ে যাবে!
পাগলির খাওয়া দেখলেই আয়াতের মাথায় রাজ্যের সব প্রশ্ন এসে ভিড় জমায়। কিন্তু সে এর কোনো খুঁজে পায় না। কেননা, কে এসে ওনাকে খাবার দিয়ে যায় তা কখনই আয়াতের নজরবন্দি হয়নি। আয়াত খুব করে দেখতে চায় কে সেই সহৃদয়বান মানুষ।
.
আজ আয়াতের শরীরটা তেমন ভালো নয়। জ্বর জ্বর মনে হচ্ছে। এরম শরীর নিয়ে কোনো ক্লাসেই সে মনোযোগী হতে পারছে না। তাই তার মনে হলো বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে চোখ বন্ধ করে একটু শুয়ে থাকবে। যেই ভাবনা সেই কাজ।
[চলবে]
writer: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।