[১]
আয়াত ভাবুক প্রকৃতির মেয়ে। সে ভাবতে ভালোবাসে। ইচ্ছাকৃতভাবে, প্রকৃতির মায়ার জালে সে বারংবার আটকে যায়। খুঁজে বের করে ভাবনার অভিনবত্ব। এতেই যেন তার স্বস্তি। খুঁজে পায় অনাবিল শান্তির খোরাক।
প্রকৃতি নিয়ে এত ভাবনাই তাকে ঠাঁই দিয়েছে দ্বীনের শীতল ছায়ায়। মহীয়ান রবের অসীম কৃপায়, সে খুঁজে পেয়েছে সত্যের দিশা। এজন্য, তাকে সইতে হয়েছে অপরিসীম ক্লেশ। তার উপর দিয়ে বইয়ে গেছে হাজারো কুমন্তব্যের ঝড়। চোখে ঝড়েছে নোনাজলের বৃষ্টি। তবুও যক্ষের ধনের মতো সে তার দ্বীন আগলিয়ে রেখে চলছে। একমাত্র আল্লাহর উপর ভরশা করে।
.
বছর তিনেক আগের কথা। তখনও আয়াত পায়ে হেঁটেই কলেজ যাওয়া-আসা করতো। বাসা থেকে তার কলেজ প্রায় ৪৫ মিনিটের পথ। মা তাকে রিক্সা ভাড়া দিলেও সে খুব একটা রিক্সায় উঠতো না। রিক্সা ভাড়া জমিয়ে সে বই কিনতো, নানা জাতের সবুজ প্লান্ট কিনতো আর দান করতো। দ্বীনে ফেরার আগেও সে প্রচুর দান করতো। তখন দান করার একটি মাত্র উদ্দেশ্য ছিল তার। আর সেটি হলো, “অসহায় মানুষের মুখে তৃপ্তির হাসি দেখা।”
কাউকে দান করার পর, সে যদি না হেসে চলে যেত। তাহলে আয়াতের খুবই মনঃকষ্ট হতো। এমনকি তার চোখ ঠেলে কান্নাও বেরিয়ে আসার জোগাড় হতো। সে একটু বেশিই আবেগপ্রবণ কি-না!
দ্বীনে ফেরার পর থেকে তার দান করার অভ্যাসটা আরও বেড়ে গিয়েছিল। তবে এবারের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। সে এখন কেবলমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্যই দান করে এবং সেটা খুবই গোপনে। যাতে তার দান করার বিষয়টা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ না জানে।
আয়াত প্রথম কলেজে গিয়েছিল তার বাবার সাথে। বাবা-মেয়ের গল্প আর খিলখিল হাসির তালে তালেই যেন রিক্সা ছুটে চলছিল আপন গন্তব্যে। গল্প করার মাঝেই আয়াতের চোখে একটি সাধারণ দৃশ্যের সূচনা হয়। কিন্তু দিনকে দিন সেই দৃশ্যটাই যেন অসাধারণ হয়ে উঠে তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
Writer: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া