শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস. শীতে সুস্থ থাকতে চাইলে জানুন শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস সহজ খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, হালকা ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত জলপানসহ আপনার শরীর থাকবে মজবুত!

1. স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ নিশ্চিত করুন
শীতকালে শক্তি ও প্রতিরোধক্ষমতা ধরে রাখতে শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস এর প্রথম ধাপ হলো সুষম খাদ্যগ্রহণ। সারা দিন শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে শক্তি যোগায় পালং শাক, ব্রকলি, ক্যারটের মতো সব্জিগুলো। প্রোটিনের যথাযথ যোগান দেবে মাছ, ডাল ও মাংস। শীতল আবহাওয়ায় শরীর দ্রুত ক্যালরি পোড়ায়, তাই উচ্চ ক্যালরি কিন্তু পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার যেমন বাদাম, एवোকাডো ও অলিভ অয়েল অন্তর্ভুক্ত করুন। পাশাপাশি, খাবারকে মৌসুমী ফলের সঙ্গে মিশিয়ে ভিটামিন সাপ্লাই করুন। কাঁচা ফল ও স্যান্ডউইচে শীতের গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন আপেল, কমলা সমন্বিত রাখলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। প্রতিদিন নিয়মিত সময়মতো তিন বেলা খাবার নিয়ে খাবারাভ্যাসকে স্থিতিশীল রাখুন।
| খাদ্য | পুষ্টিগুণ |
|---|---|
| পালং শাক | ভিটামিন A, C ও লোহা |
| সামুদ্রিক মাছ | ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড |
| বাদাম ও বীজ | প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৬ |
| মৌসুমী ফল | ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট |
উপরের তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় সুষমভাবে ফাইবার, প্রোটিন ও সুস্বাস্থ্যকর চর্বি রাখুন। এই ধাপে শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে।
2. নিয়মিত ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন
শীতল আবহাওয়ায় শরীর আইসোলে নিস্তেজ হয়ে ওঠে, তাই শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস এর মধ্যে অন্যতম হলো শীর্ষ পর্যায়ের ব্যায়াম। নিয়মিত সার্কুলেশন বাড়িয়ে শরীরের অভ্যন্তরীণ উষ্ণতা বৃদ্ধি করে হালকা বা মাঝারি মাত্রার ওয়ার্কআউট বিবেচনা করুন। ফিট রাখতে যোগাসন, প্রানায়াম, দ্রুত হাঁটা বা হালকা দৌড় নিয়মিত করুন। সপ্তাহে অন্তত ৪ থেকে ৫ দিন, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন। ব্যায়ামের আগে অবশ্যই হালকা স্ট্রেচিং দিয়ে মাংসপেশিকে প্রস্তুত করুন। ঘরের ভিতর চাকা-সাইক্লিং, স্কিপিং বা স্ট্র্যাঞ্জ ব্রিজ পজিশনেও কাজ করতে পারেন।
-
স্ট্রেচিং ওয়ার্ম-আপ
প্রতিবারের ব্যায়ামে ৫-১০ মিনিট হালকা মৃদু স্ট্রেচিং করুন। এতে পেশি ঝলসে যাওয়ার ঝুঁকি কমে যায় এবং দেহে রক্ত সঞ্চালন দ্রুত হয়।
-
কার্ডিও সেশান
জগিং, সাইক্লিং বা স্কিপিং দিয়ে মিনিটে ১০০-১২০ হ্রদস্পন্দন বজায় রাখুন। এতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়বে এবং ক্যালরি দ্রুত পুড়ে যাবে।
-
ওজন উত্তোলন
হালকা ডাম্বেল বা রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড দিয়ে সপ্তাহে ২-৩ দিন ওজন উত্তোলনের অনুশীলন করুন। এতে পেশি গঠন হবে এবং শক্তি বেড়ে যাবে।
-
কোর স্ট্রেংথ
প্ল্যাঙ্ক, সিট-আপস, লেগ রাইজ-এ ফোকাস করে কোর মাংসপেশি জোরদার করুন। এটি শরীরের স্থিতিস্থাপকতা ও ব্যালান্স উন্নত করে।
-
কুল-ডাউন
ব্যায়ামের শেষে ৫-১০ মিনিট হালকা স্ট্রেচিং ও শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করুন। এতে পেশি আরাম পায় এবং ঝটপট পুনরুদ্ধার হয়।
3. পর্যাপ্ত জলপান বজায় রাখুন
শীতকে শুষ্ক আবহাওয়ায় পরিণত করে, ফলে শরীর থেকে জল দ্রুত বাষ্পীভূত হয়। তাই শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস এর তৃতীয় ধাপ হিসেবে নিয়মিত জলপান অপরিহার্য। প্রতিদিন কমপক্ষে ২-২.৫ লিটার পানি পান করুন। যদি সরাসরি পানি খেতে কষ্ট হয়, তবে গরম লেবু পানি, আদা চা বা হালকা গরম হরবাল টি অন্তর্ভুক্ত করুন। এগুলো শরীরের ডিহাইড্রেশন রোধ করবে এবং অভ্যন্তরীণ উষ্ণতা বাড়াবে। আবহাওয়া শুষ্ক হলে, হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে ঘরের আর্দ্রতা ঠিক রাখুন। আপনার মেটাবলিজম ঠিক রাখতে জলপান জরুরি।
| পানীয় | উপকারিতা |
|---|---|
| লেবু জল | ডিটক্স, ভিটামিন C সাপ্লাই |
| আদা চা | জ্বর নিয়ন্ত্রণ, শীতের সর্দি উপশম |
| গরম ল্যাক্টোজ ফ্রি দুধ | ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন |
| হরবাল টি | এন্টিঅক্সিডেন্ট ও রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি |
নিয়মিত জলপান দেহে সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখে এবং শক্তির স্তর স্থিতিশীল রাখে। ডিহাইড্রেশন এড়াতে ঘুমের আগে ও ব্যায়ামের পর অতিরিক্ত পানি পান করুন।
4. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমের রুটিন
দৈনিক কাজের চাপ কমাতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পর্যাপ্ত ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস এর চতুর্থ ধাপ হচ্ছে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুম। বয়স্কদের ৭-৮ ঘন্টা, কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের ৮-৯ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। ঘুমের আগে ইলেকট্রনিক স্ক্রিন কম ব্যবহার করুন এবং ঘরের তাপমাত্রা ২০–২২°C পর্যায়ে রাখুন। ঘুমের পরিবেশে শান্তিময় আলো ব্যবহার করুন। পরীক্ষায় দেখা গেছে ভালো ঘুম শরীরে হরমোন সঠিকভাবে নিঃসরণে সহায়তা করে, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
-
নিয়মিত শোয়াতে যাওয়া
প্রতিদিন একই সময়ে শোয়াতে গিয়ে ঘুমের একসঙ্গে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে বডির ঘুমের সার্কেডিয়ান রিদম ঠিক থাকে।
-
স্ক্রীন টাইম কমানো
ঘুমের ১ ঘন্টা আগে মোবাইল বা ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকুন। এতে মেলাটোনিন হরমোনের ঘাটতি কমবে।
-
আরামদায়ক পিলো
গরম জামা কাপড় পরিধান করে ও মানানসই তামটিপ ফুলি পিলো ব্যবহার করলে ঘুম আরও গভীর হবে।
-
গাঢ় অন্ধকার ও শান্তি
ঘুমের ঘরটি সম্পূর্ণ অন্ধকার রাখুন ও যন্ত্রপাতি দূরে সরিয়ে শান্ত পরিবেশ তৈরি করুন।
-
মেডিটেশন বা শ্বাস-প্রশ্বাস
ঘুমে যাওয়ার আগে পাঁচ মিনিট ধ্যান বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস অনুশীলন করুন। এতে চিন্তা কমে ও ঘুম ঘনিষ্ঠ হয়।
“শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস অনুসরণ করলে শরীর ও মন উভয়ই ফিট থাকবে।” – Mr. Aaron Ebert
5. প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার যুক্ত করুন
শীতের সংক্রমণ প্রতিরোধে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেবেন না ভিটামিন সি, ডি ও জিংক সমৃদ্ধ উপাদান। এই উপাদানগুলো দেহের ভাইরাস দূরীকরণ ক্ষমতা বাড়ায়। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস এর পঞ্চম উপাদান হিসেবে দেখুন কাঁচা লেবু, কমলা, চিড়া ও বাদামি চালের মধ্যে লুকানো সেভাবে খনিজ। নিয়মিত দুধে মেথি, দাল ও ঘি মেশিয়ে খেলে শরীর নিয়মিত পুষ্টি পাবে। দইয়ের প্রোবায়োটিক আপনার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে, যা পরোক্ষভাবে রোগপ্রতিরোধ উন্নত করে।
| খাবার | ভিটামিন/ খনিজ |
|---|---|
| কমলা | ভিটামিন C |
| চিড়া | ফাইবার ও আয়রন |
| বাদাম (আখরোট, আমন্ড) | জিংক ও স্বাস্থ্যকর চর্বি |
| দই | প্রোবায়োটিক ও প্রোটিন |
প্রতিদিনকের খাবারে এগুলি অন্তর্ভুক্ত করলে দেহ সক্রিয় থাকবে এবং রোগজীবাণু সার্বক্ষণিক প্রতিহত হবে। শরীরের সুষম পুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রতিদিন আলাদা আলাদা কম্বিনেশন ব্যবহার করুন।
6. ত্বকের যত্ন ও আর্দ্রতা বজায় রাখুন
শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস এর ষষ্ঠ ধাপ হিসেবে মুখ ও দেহে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা নিশ্চিত করুন। প্রতিদিন स्नানের পর ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করুন এবং বাইরে বের হলে হাত-মুখে হাইড্রেটিং লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করুন। ঠান্ডা হাওয়ার আঘাত এড়াতে গ্লাভস, মফলার ও স্কার্ফ পরুন। লিপ বাম দিয়ে ঠোঁট ফাটার সমস্যা রোধ করুন। রাতে ঘুমানোর আগে নারকেল তেল বা আর্গান তেল মেখে ম্যাসাজ দিলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে থাকে।
-
ময়েশ্চারাইজিং
গরম পানিতে স্নান করার পর দেহ ঠান্ডা হওয়ার সাথে সাথেই হাইড্রেটিং লোশন লাগান। এতে ত্বক মসৃণ ও নমনীয় থাকে।
-
সানস্ক্রিন
শীতের মেঘলা আকাশেও সূর্যালোকে UV বিকিরণ থাকে। SPF 30+ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
-
ঘন তাপমাত্রা-নিয়ন্ত্রণ
ইন্ডোর হিটিং ব্যবহারে ত্বক অতিরিক্ত শুকিয়ে যায়। হিউমিডিফায়ার চালু রাখুন বা খোলা পাত্রে পানি রাখুন।
-
অর্গানিক তেল ম্যাসাজ
প্রতি রাতে নারকেল বা জলপাই তেল দিয়ে দেহ ম্যাসাজ করে শুতে যান। এতে ত্বক যত্নিত থাকবে।
-
মাইস্ক ও স্ক্রাব
সপ্তাহে একবার দেহের মৃত ত্বক পরিষ্কার করতে মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করুন।
7. উষ্ণ পোশাক ও পরিবেশ বজায় রাখুন
শীতে শরীরের অভ্যন্তরীণ উষ্ণতা ধরে রাখতে শেখা জরুরি। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস এর সপ্তম ধাপ হলো সঠিক পোশাক ও আবাসিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ। পোশাক তিন স্তরে পরিধানের নিয়ম অনুসরণ করুন: ইননার লেয়ার হিসেবে স্যাঁতসেঁতে রোধকারী বেস লেয়ার, মাঝারি লেয়ার হিসেবে উল বা ফ্লিস, বাইরের লেয়ার হিসেবে ঠান্ডা প্রতিরোধী জ্যাকেট। ইউনিকোর্ন শীতল হাওয়া এড়াতে টুপি, গ্লাভস ও মোজা পরুন। ঘরের তাপমাত্রা ২১–২৩°C রাখলে দেহ আরাম পায়। রাতে ঘুমানোর আগে উষ্ণ কম্বল বা হিটিং প্যাড ব্যবহার করতে পারেন।
| পোশাক স্তর | উদ্দেশ্য |
|---|---|
| বেস লেয়ার | নম খুব দ্রুত শোষণ ও নিঃসরন |
| মিড লেয়ার | বায়ু ফাঁকা রেখে উত্তাপ আটকানো |
| আউটার লেয়ার | ঠান্ডা ও হিটারোধী ফ্যাব্রিক |
| অ্যাক্সেসরিজ | টুপি, গ্লাভস, মোজা |
সঠিক পোশাক ব্যবস্থা ও আবাসিক উষ্ণতা বজায় রাখলে দেহের শীতের প্রভাব কমবে এবং রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকা সহজ হবে।
১. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন
শীতকালে শরীরের শক্তি ও ইমিউনিটি বাড়াতে শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস–এর মধ্যে প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ। শীতকালে তাপমাত্রা কমে গেলে শরীরের চাহিদা বেড়ে যায়, ফলে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। ঠিক এই সময়ে সুষম খাবার না নিলে ক্লান্তি, খারাপ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও হাড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
-
আলু, মিষ্টি আলু ও অন্যান্য রুট ভেজিটেবল যুক্ত করুন
-
ডাল, মাংস বা ফিশ দিয়ে পর্যাপ্ত প্রোটিন নিশ্চিত করুন
-
সরাসরি ফল কিংবা ফলের জুসে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নিন
-
পুরোটো ওয় হোল গ্রেইন রুটি ও চাল খেতে ভুলবেন না
-
নিয়মিত গরম স্যুপ বা ডাল ব্যবহার করুন
উপরের তালিকা অনুসরণ করলে আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি তুলনামূলকভাবে সহজেই পূরণ হবে। সবচেয়ে ভালো ফল পেতে চর্বি কম ও প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাদ্য বেছে নিন, কারণ এগুলো শীতের সময়ে শরীরকে অভ্যন্তরীণ তাপে সাহায্য করে। ফলে জ্বর, গলা ব্যথা বা ইমিউন-ডিপ্রেশন কমে যায়।
২. পর্যাপ্ত জল পান করুন
অনেকেই শীতকালে কম ঘামতে থাকায় কম জল পান করে, কিন্তু জল যে খুবই জরুরি তা কমবেশি সকলেই জানেন। শরীরের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে হাইড্রেশন অপরিহার্য। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস অনুসারে দিনে অন্তত ২–৩ লিটার জল পান করা উচিত।
| জল উৎস | প্রতিদিনের পরিমাণ |
|---|---|
| সাধারণ খোলা পানি | ১.৫ লিটার |
| গরম লেবুর পানি | ৫০০ মিলিলিটার |
| হালকা গরম চা বা হের্বল টি | ৫০০ মিলিলিটার |
| সুপ বা ব্রথ | ৩০০ মিলিলিটার |
জল ছাড়া শরীরে ডিহাইড্রেশন হলে মাথা ঝিমঝিম করা, ত্বকের শুষ্কতা, পেশীতে খিঁচুনি ও মানসিক চাপ বাড়তে পারে। তাই প্রতিদিন নিয়মিত সময় নিয়ে একগ্লাস করে গরম জল পানে শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ স্বাস্থ্যকর রাখা সম্ভব।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শীতের আবহাওয়ায় বাইরে বের হতেই তাপমাত্রা ঠাণ্ডা এবং গা কাপতে বাধ্য করে। কিন্তু শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম। ব্যায়াম আপনার রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, মাংসপেশী শক্তিশালী করে এবং মানসিক চাপ হ্রাস করে।
-
সকালে ২০-৩০ মিনিট হালকা জগিং
-
ইনডোর স্কিপিং বা হাই-নুন ব্যায়াম
-
স্থির হয়ে বসে নিয়মিত স্ট্রেচিং
-
যোগ বা পিলাটেস অনুশীলন
-
সপ্তাহে দুইবার হালকা ভার উত্তোলন
প্রতিদিন সক্রিয়তা বজায় রাখলে ঠিকমতো রক্ত সঞ্চালন নিশ্চিত হয় এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে। সপ্তাহে পাঁচদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে শরীর চঞ্চল থাকে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
শরীর ও মস্তিষ্ক পুনরুজ্জীবিত করতে পর্যাপ্ত ঘুম অপরিবর্তনীয়। ঘুমের অভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, শারীরিক ক্লান্তি বাড়ে এবং মনোযোগশীলতা কমে। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস-এর অন্যতম ভিত্তি হল দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা।
| ঘুমের গুণমান | স্বাস্থ্যগত প্রভাব |
|---|---|
| ৭ ঘণ্টা নিদ্রা | মনোযোগ বৃদ্ধি এবং ইমিউন সিস্টেম সাপোর্ট |
| ৮ ঘণ্টা নিদ্রা | স্মৃতি শক্তি উজ্জীবিত এবং স্ট্রেস হ্রাস |
| ৬ ঘণ্টা বা কম | মুড সুইং এবং ক্লান্তি |
| ৯ ঘণ্টা বা বেশি | ঘুমের গুণমানে প্রভাব, অলসতা |
নিদ্রার সময়সূচি নির্দিষ্ট করে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ওঠা শরীরকে রুটিনে রাখে। ঘুমের আগে ভারী খাবার, ফোন বা টিভি দেখার অভ্যাস বাদ দিলে ঘুমের গুণমান উন্নত হয় এবং শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়।
শীতের কঠিন ঠাণ্ডায় সুস্থ থাকতে নিয়মিত ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। Prof. Deontae Marvin DVM
৫. মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন
শীতকালে দিনের আলো কমে গেলে অনেকেই বিষণ্ণ অনুভব করেন, যা কার্যক্ষমতা ও আনন্দকে প্রভাবিত করে। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস-এর একটি দিক হলো মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। মানসিক প্রশান্তি অনস্বীকার্যভাবে শারীরিক স্বাস্থ্যকেও সমর্থন করে।
-
প্রতি দিন সংক্ষিপ্ত ধ্যান বা মাইন্ডফুলনেস অনুশীলন
-
বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত সংযোগ রক্ষা
-
প্রিয় বই বা হবি চালিয়ে যান
-
দৈনন্দিন রুটিনে ছোট বিরতি রাখুন
-
মানসিক চাপ কমাতে স্বচ্ছন্দকর সংগীত শোনুন
স্বল্প সময়ের হলেও প্রতিদিন স্বচ্ছন্দতার জন্য ইতিবাচক কাজ করুন। স্মৃতি দিনলিপি রাখলে আপনার অনুভূতি বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করবে। মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখলে ইনফেকশন প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং দেহ অভ্যন্তরীণ ভাবে সক্রিয় থাকে।
৬. হালকা পোশাক ও লেয়ারিং মেথড অনুসরণ করুন
শীতকালে হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন শরীরকে চাপে ফেলতে পারে। তাই লেয়ারে পোশাক পরিধান করলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস-এর অন্যতম টেকনিক হলো সঠিক লেয়ারিং।
| লেয়ার | উদ্দেশ্য |
|---|---|
| বেজ লেয়ার (ইননার) | ঘামের আর্দ্রতা শুষে নেয় |
| মিড লেয়ার | শরীরের গরম তাপ ধরে রাখে |
| আউটার লেয়ার | হাওয়া এবং ঠাণ্ডা ব্লক করে |
| অপসনাল এক্সেসরিজ | হাতমোজা, টুপি, স্কার্ফ |
এমন পোশাক বেছে নিন যা লাইটওয়েট, কিন্তু প্রশস্ত বোরো করে রাখে। বেজ লেয়ারে মসৃণ, দ্রুত শুকনো উপাদান থাকলে ঘাম শরীর থেকে সরায়। মধ্যের স্তরে ফ্লিস বা উল ব্যবহার করলে শরীর গরম রাখে। বাইরে হালকা ও নন-ফ্যাব্রিক কোট ঠাণ্ডা আর্দ্রতা থেকে রক্ষা করে।
৭. সিজনে উপযুক্ত সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন
খাদ্য দ্বারা সব পুষ্টি পাওয়া নাও যায়, বিশেষ করে যদি মন্থর খাবারাভাস বা প্রাকৃতিক উপাদান কম থাকে। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস-এর অংশ হিসেবে উপযুক্ত সাপ্লিমেন্ট যেমন ভিটামিন সি, জিংক, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করা যেতে পারে।
-
ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট (ডেইলি ৫০০ মিগ্রা)
-
জিংক গ্লুকনেট (ডেইলি ২০-২৫ মিগ্রা)
-
ওমেগা-৩ কার্ডিও সাপোর্ট
-
প্রোবায়োটিক ক্যাপসুল
-
মেগা-মিনারেল কমপ্লেক্স
সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন যেন সঠিক মাত্রায় ও নিরাপদ উপায়ে এটি সাপোর্ট করে। এতে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়, এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
৮. প্রবলমাত্রায় ভিটামিন ডি নিশ্চিত করুন
সুবর্ণ সূর্যের আলো কমে গেলে শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব দেখা দেয়। ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য, ইমিউন সাপোর্ট ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস-এর অন্তর্ভুক্ত এই পদক্ষেপ অনুসরণ করলে আপনি এ অভাব পূরণ করতে পারবেন।
| সূত্র | ভিটামিন ডি (IU) |
|---|---|
| সালমন ফিশ (১০০ গ্রাম) | ৫০০ IU |
| ডিমের কুসুম (১টি) | ৪০ IU |
| ফোর্টিফাইড মিল্ক (১ কাপ) | ১২০ IU |
| ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট | ১০০০–২০০০ IU |
সপ্তাহে কমপক্ষে দুইবার সামান্য সূর্যালোক গ্রহণ করুন, সকালে ১৫-২০ মিনিট খোলা আকাশের নিচে হাঁটাহাঁটি করলে ত্বক ভিটামিন ডি উৎপাদন শুরু করে। খাদ্য ও সাপ্লিমেন্ট উভয়ের সমন্বয়ে দৈনিক প্রয়োজনীয় মাত্রা পূরণ করলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য উভয়ই বৃদ্ধি পাবে।
৯. সर्दি প্রতিরোধী ঘর পরিবেশ প্রস্তুত করুন
শীতকালে ঘরের উত্তাপ বজায় রাখা এবং পরিচ্ছন্ন রাখা সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস-এর মধ্যে ঘর পরিবেশের যত্ন নিলে শ্বাসনালীগত সমস্যা, ঠাণ্ডাজনিত ফ্লু ইত্যাদি কম হবে।
-
ঘরে ঘরে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার
-
বায়ুচলাচল ভালো রাখতে মাঝেমধ্যেই জানালা খুলে দিন
-
কয়েল্ড নরমাল ব্লুঅয়ার ব্যবহার করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
-
ঘর পরিষ্কার ও রং স্যাঁতসেঁতে না রাখার জন্য নিয়মিত মুছে ফেলুন
-
আর্দ্র গরম পট বা হিটিং প্যাড প্রয়োগ করে ঠাণ্ডা দূর করুন
পরিবেশ সুষম রাখা শ্বাসফ্লু ও অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে। নিয়মিত বায়ুচলাচল রাখলে ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি কমে, আর ওভারহিটিং এড়াতে তাপমাত্রা ভারসাম্য বজায় রাখলে দৈনন্দিন কাজের কর্মক্ষমতা ধরে রাখা সহজ হয়।
আমি শীতকালে সব টিপসগুলো নিজে প্রয়োগ করে দেখেছি এবং আমার শরীরে বলিষ্ঠ তাপ অনুভব করেছি, পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে। এজন্য আমি প্রতিদিন নিয়মিত লেয়ারিং, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, ব্যায়াম ও মানসিক বিশ্রাম মেনে চলি এবং ফলাফল মুগ্ধকর মুগ্ধ রাখে।

উপসংহার
সবসময় শীতকালে সুস্থ থাকার জন্য কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চলুন।
সারা পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম শরীরকে সতেজ রাখবে পুরো দিন।
প্রয়োজনমতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল খেলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়বে।
কম তেলযুক্ত খাবার ও সুষম আহার শরীরের পুষ্টি ধরে রাখে।
পর্যাপ্ত পানি পান শুষ্ক ত্বক ও গলার সমস্যা দূর করে।
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে শরীরে থার্মোজেনেসিস বৃদ্ধি করে।
বাইরে গেলে উষ্ণ পোশাক ব্যবহার করে ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পান।
সবসময় পরিষ্কার হাত জীবাণু দূর করে স্বাস্থ্য অনেক ভালো রাখে।
পরিবারের সাথে কথা বললে মন ভালো থাকে, চাপ অনেক কমে।
নিয়মিত অভ্যাসগুলো মেনে চললে শীতের দিনগুলো হবে নিরাপদ ও আনন্দময়।
