চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় দশম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.মোস্তাফিজুর রহমান আজ মঙ্গলবার এ কথা জানান।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক এ–সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুণ্ডু স্যারের কাছ থেকে বরখাস্তের আদেশের বিষয়টি জানতে পারি। এরপর অফিস পিয়নের মাধ্যমে দুপুরে চিঠি হাতে পাই।’
উপজেলা প্রশাসন ও প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই স্কুলশিক্ষিকা নিজের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তাঁর দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের বউ করে আনবেন বলে কিছুদিন ধরে সহকর্মীদের জানিয়ে আসছিলেন। পরে গত শুক্রবার শিক্ষিকা নিজে উপস্থিত থেকে ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে দেন। গতকাল সোমবার বিষয়টি জানাজানি হলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়া অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুণ্ডুকে চিঠি দেন। এরপর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনা তদন্তে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুমা আক্তারকে সরেজমিনে পাঠান। সরেজমিন তদন্তে অভিযুক্ত শিক্ষিকা তাঁর কাছে ঘটনা স্বীকার করেন এবং লিখিত বক্তব্য দেন। এরপর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন বলে লিখিত প্রতিবেদন জমা দেন মাসুমা আক্তার। এর পরিপ্রেক্ষিতে দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে আজ ওই সহকারী শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে গতকাল অনলাইন সংস্করণে এবং আজ ছাপা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর থেকে পাঠানো আদেশে উল্লেখ করা হয়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ২৮ মার্চের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং নিজ স্বীকারোক্তি ও প্রাথমিক তদন্তে ওই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার [১৮৮৫-এর বিধি-৩ এর অনুচ্ছেদ (বি), (সিডি) বা (ডি)] অধীনে অসদাচরণের অভিযোগে তাঁকে ২৯ মার্চ ২০২২ থেকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সাময়িকভাবে বরখাস্ত থাকাকালে ওই স্কুলশিক্ষিকা যথারীতি কর্মস্থলে অবস্থান সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন।