করোনাভাইরাসের গণটিকাদানের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পিছিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে। সার্কভুক্ত সাতটি (মালদ্বীপ বাদে) দেশের হিসাবে, টিকাদান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পেছনের রয়েছে শুধু আফগানিস্তান।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রধানদের নিয়ে গঠিত কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের এক ওয়েবসাইটে এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে করোনার টিকা নিশ্চিত করা ও চিকিৎসা–সংক্রান্ত বিষয়ে সহায়তার লক্ষ্যে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। তাদের ওয়েবসাইটটি শুক্রবার চালু করা হয়।
এতে দেখা যায় বাংলাদেশ যেমন জনসংখ্যার বিপরীতে দুই ডোজ টিকা পাওয়া মানুষের হারের দিক দিয়ে পেছনের সারিতে রয়েছে, তেমনি পিছিয়ে এক ডোজ টিকা পাওয়া মানুষের হার ও দৈনিক টিকাদানের ক্ষেত্রেও।
ওয়েবসাইটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনসংখ্যার বিপরীতে কত শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে, দেশগুলো কত টিকার সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেরেছে, তাদের গণটিকাদানের গতি কেমন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কত মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য—এসব নানা বিষয়ে তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়।
ওয়েবসাইট চালুর পাশাপাশি তাদের দ্বিতীয় বৈঠক পরবর্তী একটি যৌথ বিবৃতিও দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উন্নয়নশীল বিশ্বে মানুষের জন্য টিকা সরবরাহ, পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি, যা আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি। নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে টিকা সরবরাহ উদ্বেগজনকভাবে কম, বিশেষ করে চলতি বছরের বাকি সময়ের ক্ষেত্রে।’
টাস্কফোর্সের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ৬১ শতাংশকে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ভুটান, প্রায় ৬২ শতাংশ। এরপরে রয়েছে শ্রীলঙ্কা ৯ দশমিক ৩১; ভারত ৭ দশমিক ২৪, নেপাল ৫ দশমিক ৩২ ও পাকিস্তান ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সবার পেছনে থাকা আফগানিস্তানে মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ দুই ডোজ টিকা পেয়েছে।
জনসংখ্যার অনুপাতে এক ডোজ টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। সার্কভুক্ত দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি এক ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে ভুটানে, ৬৩ শতাংশ। এরপরে রয়েছে শ্রীলঙ্কা (৪০ দশমিক ৭২), ভারত (২৫ দশমিক ৮১), নেপাল (১২ দশমিক ৫৩), পাকিস্তান (৪ দশমিক ২১), বাংলাদেশ (৪ দশমিক ১৮) ও আফগানিস্তান (১ দশমিক ৯৬)।
টাস্কফোর্সের ওয়েবসাইটে প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে বিগত সাত দিনে কতজনকে টিকা দেওয়া হয়েছে, তার একটি গড় হিসাবও তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, সবচেয়ে দ্রুত টিকা দেওয়া হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। এরপরে রয়েছে নেপাল, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও ভুটান। অবশ্য ভুটানে জনসংখ্যার বড় অংশকে টিকা দেওয়া হয়ে গেছে।
টাস্কফোর্সের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এ পর্যন্ত টিকা পেয়েছে প্রায় ২ কোটি ৫৮ লাখ। তবে জনসংখ্যার ৪০ শতাংশকে এ বছরের শেষ নাগাদ টিকা দিতে প্রয়োজন প্রায় ১৩ কোটি ১৮ লাখ ডোজ টিকা।