ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে রোগীদের খাদ্য সরবরাহের দুর্নীতির প্রতিবেদন করায় গ্রেপ্তার জাগোনিউজ২৪.কম ও দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি তানভির হাসান তানু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও সদর থানা এলাকা থেকে তানুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর মধ্যরাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে সাংবাদিক তানুকে গ্রেপ্তারের পর রাতেই ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা অবস্থান নেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তাঁরা। এ সময় তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান অবস্থানকারীরা। এ ঘটনায় সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দা জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে জাগোনিউজ২৪.কম ও দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি তানভির হাসান তানু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটু ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজবাংলা.কম-এর প্রতিনিধি রহিম শুভ এবং অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ৫, ৬ ও ৭ জুলাই বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের সরকারি বরাদ্দের কম মূল্যের খাবার সরবরাহ নিয়ে মিথ্যা ও জনরোষ সৃষ্টিকারী মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যা ওই সাংবাদিকরা পরস্পরের সহায়তায় ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের সুনাম ক্ষুণ্ণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করাসহ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার অসৎ উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রতি জনসাধারণের আস্থাহীনতা জনরোষ, বিদ্বেষ ও বিভ্রান্ত সৃষ্টি হওয়ার ঘটনা উপক্রম হয়। এ অবস্থায় বর্ণিত সাংবাদিক ও তাঁদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।
ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী বলেন, ‘কিছু কুচক্রী মহল চায় তাদের দুর্নীতি ও অপরাধের চিত্র যাতে দেশের মানুষ জানতে না পারে, সে জন্য সাংবাদিকদের দাবিয়ে রাখতে এই মামালার আশ্রয় নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই দুর্নীতিবাজ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে।’
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান মিঠু বলেন, ‘সত্য সংবাদকে ঢাকতে ও অসৎ ব্যক্তিদের পক্ষ নিয়েছে কিছু উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা। সাংবাদিকদের দমিয়ে রাখতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। অবিলম্বে সব সাংবাদিককে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া না হলে সাংবাদিকদের নিয়ে রাজপথে থেকে দাবি আদায় করা হবে।’