জাতিসংঘের শিশু অধিকার কমিটি জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ৭৫ শিশু নিহত হয়েছে। আটক হয়েছে আরও হাজার খানেক।
আল জাজিরা এ বিষয়ক এক প্রতিবেদনে জানায়, করোনা মহামারির মতো আপত্কালীন সময়ে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার ‘নির্ভরযোগ্য তথ্যের’ উল্লেখ করে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭৫ শিশু নিহত ও ১ হাজার আটকের প্রতিবেদন দেয় জাতিসংঘের বিশেষ এ কমিটি।
কমিটির প্রধান মিকিকো ওটানি এক বিবৃতিতে বলেন, অবরোধ ও সামরিক অভ্যুত্থানের কবলে পড়ে মিয়ানমারের শিশুরা আকস্মিক জীবনহানির শিকার হচ্ছে।
নির্বাচিত অং সান সু চি’র সরকারকে উৎখাত করে ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। আটক করে সু চি-সহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের। এরপর থেকে দেশটি শুরু হয় বিক্ষোভ ও সহিংসতা। এতে মারা গেছে হাজারের কাছাকাছি মানুষ।
ওটানি বলেন, মিয়ানমারের শিশুরা প্রতিদিন নির্বিচার সহিংসতা, এলোপাতাড়ি গুলি ও আটকের শিকার হচ্ছে। বাবা-মা, ভাই-বোনদের মতো নিজেদের গুলির লক্ষ্যবস্তু হতে দেখছে তারা।
এ কমিটি ১৮ জন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দ্বারা গঠিত, যারা কনভেনশন অন দ্য রাইটস অব দ্য চাইল্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত। ওই কনভেনশনে ১৯৯১ সালে সই করে মিয়ানমার।
বিশেষজ্ঞরা জান্তা ও পুলিশ কর্তৃক হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি বলে, অনেক ভুক্তভোগী নিজেদের বাড়িতে নিহত হয়েছে। এর মধ্যে পেটে পুলিশের করা গুলিতে নিহত ছয় বছরের মেয়ে শিশুও রয়েছে।
থানা, কারাগার ও সেনাবাহিনীর ডিটেনশন সেন্টারে শিশুদের নির্বিচারে আটকের নিন্দা জানান তারা। আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে মা-বাবাকে না পেয়ে জিম্মি হিসেবে শিশুদের আটক করা হচ্ছে।
এ দিকে শুক্রবার মানবাধিকার পর্যবেক্ষক দ্য অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজর্নাস (এএপিপি) জানায়, ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে কমপক্ষে ৯১২ জন মানুষ নিহত হয়েছে, আটক করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৭০ জনকে। এখন আটক বা সাজা খাটছে ৫ হাজার ২৭৭ জন।
এ দিকে মিয়ানমারে কভিড পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখের বেশি মানুষ, মারা গেছে ৪ হাজার ৩০০ জন। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি।