সংকেত ধ্বনি উৎপাদক যন্ত্র আবিষ্কারের কাহিনী কী?

সংকেত ধ্বনি উৎপাদক যন্ত্রকে ইংরেজিতে বলে ‘সাইরেন’। জনসাধারণকে সতর্ক করার যন্ত্র। এর মাধ্যমে উচ্চধ্বনি উৎপাদন করে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এটি শব্দ বিজ্ঞানের অন্তর্গত। শব্দকে উচ্চ খাদে নিয়ে গিয়ে যন্ত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

যুদ্ধকালীন বিপদ সঙ্কেত দানের উদ্দেশ্যেই সাইরেন আবিস্কার অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছিল। সঙ্কেত ধ্বনি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে জনগণ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে।যায়, সে কথা মাথায় রেখেই উদ্ভাবন করা হয় এই যন্ত্রটির।

পরবর্তী কালে কলকারখানার শ্রমিকদের সময় জ্ঞাপন এবং সতর্কীকরণের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

বর্তমানে অবশ্য যুদ্ধ বিগ্রহ তেমন নেই। তাই কল কারখানাতেই এর ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। এক সময় কেবল বাষ্প শক্তির সাহায্যেই এটি চালিত হত। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ এর প্রসার ঘটায় বিদ্যুৎ শক্তির মাধ্যমেই যন্ত্রটি বেশি চালিত হয়।

সঙ্কেত ধ্বনি বা সাইরেন আবিষ্কার করেন রবিরসন। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক। স্কটল্যান্ড ছিল তার জন্মভূমি। কর্মস্থলও ছিল সেই শহরেই। আঠার শতকের শেষের দিকে তিনি যন্ত্রটি আবিষ্কার করার পর দ্রুত প্রসার লাভ করতে থাকে। এর সম্পূর্ণ নাম ‘কগন্যায়ার্ড ডি, লা টুর’ এর সাইরেন। ফরাসি ইঞ্জিনিয়ার চার্লস কগন্যায়ার্ড ডি, লা টু-র নামানুসারে যন্ত্রটির এরকম নামকরণ করা হয়।

উইন্ড চেস্ট নামে একটি ফাঁপা বেলনাকৃত বাক্স এর প্রধান অংশ। এর ওপরের দিকে একটি ঢাকনাা গায়ে বৃত্তাকারে কয়েকটি গর্ত থাকে। গর্তগুলি সমান দূরত্বে অবস্থান করে। আর বিশেষত্ব হচ্ছে গর্তগুলি কাত করা অবস্থায় থাকে। ফাঁপা বাক্সটির নিচে ধাতব পাতের সঙ্গে একটি নল লাগানো থাকে। এর মাধ্যমে পাম্পের সাহায্যে বাতাস বাক্সতে ঢোকানো সম্ভব হয়। অন্য আর একটি চাকা প্রথম চাকাটির ওপর অবস্থান করে। এর গায়েও আগেরটির সমান দূরত্বে এবং সমান সংখ্যক ছিদ্র করা থাকে। তবে নিচের পাতের গর্তগুলির সঙ্গে পার্থক্য হচ্ছে এর গায়ের গর্তগুলি বিপরীত দিকে কাত করে তৈরি। যান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করে বিদ্যৎ শক্তি বা বাষ্প শক্তির সাহায্যে চাকাটি ঘুরানো হয়। ফলে উন্ড চেস্টের মাধ্যমে বাতাস ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পর মুহূর্তে উপরের চাকার গর্তগুলি নীচের চাকার গর্তগুলির বরাবরে আসার সঙ্গে সঙ্গে দমকা হাওয়া বেড়িয়ে আসে। প্রবল বেগে বাতাস বেরিয়ে আসার ফলে শব্দের উদ্ভব ঘটে। এবার চাকাটি যত দ্রুত ঘুরবে, যন্ত্রটি থেকে নির্গত শব্দ তত উচ্চ খাদে এবং কর্কশ ধ্বনি নির্গত হবে।

যুদ্ধকালে জনসাধারণ এবং অন্য সময়ে কল কারখানার শ্রমিকরা যন্ত্রের কর্কশ ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গে কারখানা থেকে হাজিরা এবং ছুটি সমন্ধে সতর্ক হয়ে যায়।

লিখেছেন: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Share.

My name is Mahazabin Sharmin Priya, and I am an author who studied Mathematics at the National University. I have a deep passion for writing in various genres, including Islam, technology, and mathematics. With my knowledge and expertise, I strive to provide insightful and engaging content to readers in these areas.

Leave A Reply

mostplay app

4rabet app

leonbet app

pin up casino

mostbet app

Exit mobile version