উল্লেখিত এই ছবিটি সমন্ধে কেউ জানেন কী? আচ্ছা, জানার কথা বাদ দিলাম। এই ছবিটির দিকে একবার গভীরভাবে তাকান তো! নিজেকে প্রশ্ন করুন, মূর্তিটি কিসের হতে পারে?

মূর্তিটির দিকে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে তাকিয়েও যদি বুঝতে না পারেন তাহলে আপনাকে কিছু ক্লু দিব। এরপরও যদি বুঝতে না পারেন, তবে সর্বেশেষে বিস্তারিতভাবে লেখা থাকবে। সেটি দেখে আপনি স্বচ্ছ ধারণা পাবেন, আশা করা যায়।

শৈশবে আপনার- আমার একমাত্র আশ্রয়স্থল কোথায় ছিল? বাবার কাঁধ বা পিঠ আর মায়ের কোল। কতই না ভালোবেসে তাঁরা আমাদের বড় করেছেন। নিজে হাজারো পরিশ্রম করে আমাদের ঠোঁটে ফুটিয়েছেন তৃপ্তির হাসি। আমাদের চাওয়াগুলোকে পূর্ণতা দিতে তাঁদের কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে, আমরা তা কখনো খতিয়ে দেখি না কিন্তু!

মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আমরা প্রথম বাবা-মাকে ছাড়া থাকতে শিখি। এরপর প্রয়োজনের তাগিদে আরো অনেকগুলো বছর আমাদের বাইরে কাটাতে হয়। অনেকটা সময় পর আমরা উপলব্ধি করি, তাঁদের স্পর্শের জন্য আমরা আর কাতর হই না। অনেকদিন দেখা না হলেও খুব একটা মনোকষ্ট হয় না।

দেখতে দেখতে আমরা অনেক বড় হই। আমাদেরও পরিবার হয়। কাঁধে নেই অন্য কারো দায়িত্ব। একসময় যে ভালোবাসার ভাগীদার ছিল শুধুই বাবা আর মা। সেই ভালোবাসাগুলো ভাগ হয়ে যায় আমাদের পরিবারের মাঝে। স্ত্রী অথবা স্বামী, সন্তানদের ভালোবাসতে বাসতে আমরা আমাদের বাবা মায়ের জন্য জমানো ভালোবাসাগুলো থেকেও কিছু ভালেবাসা এনে এদের মাঝে বিলি বন্টন করে দিই।

বাবা-মা বৃদ্ধ হয়। বৃদ্ধ বাবা-মাকে আবার ভালোবাসতে হয় নাকি? তাঁরা ততদিনে আমাদের বোঝাস্বরূপ। কেননা তাঁরা তো আর পরিশ্রম করতে পারেন না। বরং নিজে পরিশ্রম করে এসে আবার তাঁদের সেবা করতে হয়! এত সময় আছে আমাদের? আমরা তো এখন তথাকথিত স্মার্ট মানুষ। আমার ক্যারিয়ার আছে, আমার পরিবারের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে। উনাদের দেখাশুনা করে সময় অপব্যয় করার কোনো মানে আছে নাকি?! (যেসব সন্তান এমন ধারণা রাখে তাদের প্রতি আল্লাহর লানত)

আমরা ভুলে যাই, তাঁরাও আমাদের পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। তাঁদের কারণেই আমরা আজ এমন একটা বেটার লাইফ পার করছি। আমরা অকৃতজ্ঞের মতো তাঁদের অবহেলা করতে শুরু করি। একসময় এত বেশি অমানুষ হয়ে যাই যে, তাঁদেরকে নিজের কাছে রাখতেও যেন আমাদের বিরক্তির শেষ নেই। অবশেষে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে আমরা বাড়ি ছাড়া করে রেখে আসি বৃদ্ধাশ্রমে! যাঁরা দিনের পর দিন আমাদের বুকে আগলে বড় করেছেন, শেষ বয়সে এসে তাঁদেরই আমরা নিঃসঙ্গতার ঠিকানা ধরিয়ে দেই।

এবার আসি মূর্তিটির প্রসঙ্গে।
এই মূর্তিটির নাম – “Emptiness” বা শূন্যতা।
ব্রোঞ্জ নির্মিত মূর্তিটি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা লেকের পারে স্থাপন করেছেন শিল্পী- এলবার্ট জর্জ।

এটা তৈরীর পিছনে উদ্দেশ্য হল বৃদ্ধ অবস্থায় সন্তানদের অনুপস্থিতিতে বাবা-মা কি সীমাহীন মানসিক শুন্যতায় ভোগেন তার প্রকাশ।

লেখাঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Share.

My name is Mahazabin Sharmin Priya, and I am an author who studied Mathematics at the National University. I have a deep passion for writing in various genres, including Islam, technology, and mathematics. With my knowledge and expertise, I strive to provide insightful and engaging content to readers in these areas.

Leave A Reply

mostplay app

4rabet app

leonbet app

pin up casino

mostbet app

Exit mobile version