কক্সবাজারের রামুতে গভীর রাতে দুর্বৃত্তের ছুড়ে মারা অ্যাসিডে তৈয়ূবা বেগম (২০) নামের এক তরুণীর মুখমণ্ডল ঝলসে গেছে। আগামী শুক্রবার এই তরুণীর বিয়ের দিন ধার্য ছিল। উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝিরকাটা গ্রামে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

বর্তমানে ওই তরুণী কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। মামলা–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিবাদীপক্ষ পরিকল্পিতভাবে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি তরুণীর পরিবারের।

ঘটনাটি নিশ্চিত করে রামুর গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফরহাদ আলী বলেন, দুর্বৃত্তদের ধরতে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

অ্যাসিডে ওই তরুণীর ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মুখমণ্ডল ঝলসে গেছে। সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
শাহীন মো. আবদুর রহমান চৌধুরী, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, কক্সবাজার সদর হাসপাতাল


তরুণীর বাবা মোজাফফর আহমদ বলেন, সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঘরের বাইরে শৌচাগারে যান মেয়ে তৈয়ূরা। এ সময় প্রতিবেশী নুরুল আবছার ও ফরিদ আলম তাঁর মেয়েকে উদ্দেশ করে অ্যাসিড ছুড়ে মারেন। মেয়ের আর্তচিৎকারে স্থানীয় ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে ওই দুজন পালিয়ে যান। শুক্রবার একই ইউনিয়নের শাহমোহাম্মদ পাড়ার নুরুল আজিমের সঙ্গে তৈয়ূবার বিয়ের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তার আগে অ্যাসিডে মেয়ের মুখ ঝলসে দিল।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাহীন মো. আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, অ্যাসিডে ওই তরুণীর ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মুখমণ্ডল ঝলসে গেছে। সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তিন মাস আগে মোজাফফর আহমদের ছেলে আজিজ মৌলার (তরুণীর ভাই) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বাদশা মিয়ার ছেলে নুরুল আবছারের ঝগড়া হয়। এর জের ধরে বাদশা মিয়ার নেতৃত্বে তাঁর চার ছেলে মোজাফফর আহমদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেন। হামলায় মোজাফফর আহমদসহ তাঁর তিন ছেলেমেয়ে আহত হন। এ ঘটনায় মোজাফফর আহমদ বাদী হয়ে বাদশা মিয়াসহ তাঁর চার ছেলের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

মামলাটি এখন পুলিশের তদন্তাধীন। কিছুদিন ধরে মামলাটি তুলে নিতে মোজাফফর আহমদের ওপর চাপ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। অ্যাসিড ছুড়ে মারার ঘটনায় যে দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই নুরুল ও ফরিদ বাদশা মিয়ার ছেলে। এই দুজন বাড়ি ভাঙচুর মামলার আসামি জানিয়ে তরুণীর বাবা মোজাফফর আহমদ বলেন, পরিকল্পিতভাবে অ্যাসিড ছুড়ে তাঁর মেয়ের জীবনটা শেষ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি এই বর্বর ঘটনার বিচার চান।

গর্জনিয়া ইউনিয়ন বিট পুলিশিং ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ ইউনিয়নে আগে অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেনি। এলাকার কোথাও অ্যাসিড বিক্রি হয় না। কঠোর লকডাউনের এ সময়ে বাইরে থেকে অ্যাসিড সংগ্রহ করে পরিকল্পিতভাবে তরুণীর ওপর নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।

Share.

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Leave A Reply

mostplay app

4rabet app

leonbet app

pin up casino

mostbet app

Exit mobile version