ডিজিটাল ফোরট্রেস ড্যান ব্রাউনের রচিত একটি টেকনো থ্রিলার যা ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত হয়। এখানে বলা হয় সুসান ফ্লেচার নামক এক গণিতবিদ ও ক্রিপ্টোলজিস্টের গল্প যিনি ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)-তে কাজ করেন। তাকে হোয়াইট হাউসের একটি ডিজিটাল ফটোগ্রাফে লুকিয়ে থাকা একটি রহস্যময় কোডের পাঠোদ্ধার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কোডটি পাঠোদ্ধার করা গেলে এটি দিয়ে NSA-এর সমস্ত গোপনীয় ফাইলগুলো অ্যাক্সেস করা যাবে। এমনকি সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ইনফরমারদের পরিচয়ও জানা যাবে।
ফ্লেচার শীঘ্রই বুঝতে পারেন যে তিনি কোডটাকে শুরুতে যতটা জটিল ভেবেছিলেন কোডটা তার চেয়েও অনেক বেশি জটিল। তিনি হয়তো একা একা এটার সমাধান বের করতে পারবেন না। তাই তিনি ডেভিড বেকারের সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। বেকার এক তরুণ মেধাবি ক্রিপ্টোলোজিস্ট যিনি এনএসএ-র ইউরোপীয় ডিভিশনে কাজ করেন। তারা দুজনেই এবার লেগে পড়েন কোডের পাঠোদ্ধারে যেন ভুল হাতে পড়ার আগেই কোডটাকে উদ্ধার করতে পারেন।
কোড সমাধান করতে যেয়ে ফ্লেচার এবং বেকার দুজনেই এক বড় ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করেন যা আমেরিকার নিরাপত্তাকেই ঝুকিতে ফেলবে। তাদেরকে নিজেদের দক্ষতা ও রিসোর্স ব্যবহার করে এই ষড়যন্ত্রকে ঠেকাতে হবে বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই।

ডিজিটাল ফোরট্রেস: উপন্যাসের চরিত্ররা
সুসান ফ্লেচার – এনএসএর প্রধান ক্রিপ্টোগ্রাফার এবং উপন্যাসের প্রধান চরিত্র
ডেভিড বেকার – আধুনিক ভাষার একজন অধ্যাপক এবং সুসান ফ্লেচারের বাগদত্তা
এনসেই তানকাডো – ডিজিটাল ফোরট্রেস এর লেখক এবং প্রাক্তন NSA কর্মচারী।
কমান্ডার ট্রেভর স্ট্র্যাথমোর – NSA ডেপুটি ডিরেক্টর অফ অপারেশনস
ফিল চার্টুকিয়ান – সিস-সেক টেকনিশিয়ান
গ্রেগ হেল – এনএসএ ক্রিপ্টোগ্রাফার
লেল্যান্ড ফন্টেইন – এনএসএর পরিচালক
হুলোহট – পাসকি বের করার জন্য নর্থ ডাকোটার ভাড়া করা ঘাতক
মিজ মিলকেন – ফন্টেইনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিশ্লেষক
চ্যাড ব্রিঙ্কারহফ – ফন্টেইনের ব্যক্তিগত সহকারী
“জব্বা” – NSA এর সিনিয়র সিস্টেম সিকিউরিটি অফিসার
সোশি কুটা – জাব্বার প্রধান প্রযুক্তিবিদ এবং সহকারী
টোকুগেন নুমাতাকা – এক জাপানি এক্সিকিউটিভ যিনি ডিজিটাল ফোরট্রেস কেনার চেষ্টা করছেন।

ডিজিটাল ফোরট্রেস এক রেসিং কার গতির থ্রিলার। আপনি বই শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বুঝতেই পারবেন না শেষে কি হতে যাচ্ছে। ব্রাউন দারুণ কাজ করেছেন এই বইয়ে। এখানে যেমন আছে জটিল একটি গল্পের প্লট, তেমনি আছে সুগঠিত কিছু চরিত্র। বইয়ে আছে প্রচুর মোড় আর টুইস্ট। আর যেভাবে সমাপ্তি টানা হয়েছে তা একইসাথে পাঠককে স্যাটিসফাই করবে এবং বিস্মিতও।
আপনি টেকনো থ্রিলারের ভক্ত হলে আপনার অবশ্যই ডিজিটাল ফোরট্রেস পড়া উচিত। বইটা দারুণভাবে লেখা হয়েছে। পুরো বইটি টানটান উত্তেজনাপূর্ন। এটি আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিনোদিত রাখবে।
আসুন বইয়ের কিছু পজিটিভ ও নেগেটিভ দিক দেখা যাক:

পজিটিভ দিক:
-দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং সাসপেন্সে ভরপুর
-চরিত্রগুলো সুগঠিত
-জটিল প্লট, টুইস্ট ও মোড়ে পরিপূর্ণ
-সন্তোষজনক সমাপ্তি

নেগেটিভ দিক:
-কিছু টেকনিক্যাল ডিটেইলস পাঠকের কাছে জটিল লাগতে পারে, বিশেষ করে যাদের এ ব্যাপারে তেমন ধারণা নেই।
-এন্ডিংয়ে খুব বেশি বিশেষত্ব আছে তা বলা যাবে না।

মোটকথা বলা যায়, ডিজিটাল ফোরট্রেস এক দুর্দান্তভানে রচিত টেকনো থ্রিলার যা পাঠককে বিনোদিত করবেই। বিশেষ করে এই জনরার পাঠকভক্তদের। আপনি যদি টান টান উত্তেজনার কোনো বই খুজে থাকেন তাহলে এই বইটা আপনার জন্য।
ডিজিটাল ফোরট্রেসের চরিত্রগুলোকে আমার খুব ভালো লেগেছে। সুসান ফ্লেচার বেশ বুদ্ধিমান ও শক্ত মনোভাবসম্পন্ন এক প্রোটাগোনিস্ট। ডেভিড বেকারও সাইডকিক হিসেবে দারুণ। ব্রাউন যেভাবে ফ্লেচার ও বেকারের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন সেটাও ভাল লেগেছে। তাদের মধ্যে দারুণ কেমিস্ট্রি ছিল। আমি মনেপ্রাণে চাইছিলাম তারা সফল হোক।
ডিজিটাল ফোরট্রেসের গল্পকাহিনী বেশ জটিল ও সাস্পেন্সে ভরা ছিল। সবসময় বোঝার চেষ্টা করছিলাম এরপর কি ঘটতে যাচ্ছে। পুরো বইয়ে এক মূহুর্তের জন্যও বোর লাগেনি। ব্রাউন সুন্দর গতিতে গল্পকথন চালিয়ে গেছেন। আবার তিনি বেশি কথা আগেই বলে ফেলেননি। সময়মতো বলেছেন।
ডিজিটাল ফোরট্রেসের সমাপ্তি সন্তোষজনক ছিল। সুন্দরভাবে গল্পটার শেষ হয়েছে। পড়ার পর ঝুলে থাকার অনুভুতি হয়নি। যেভাবে সব ঘটেছে তাতে আমি সন্তুষ্ট।
মোটামুটি বলা যায়, আমার কাছে ডিজিটাল ফোরট্রেস সত্যিই ভাল লেগেছে। এটা খুব সুন্দরভাবে লেখা বিনোদনমূলক থ্রিলার যা পাঠকদের ভাল লাগতে বাধ্য। আমি সবার কাছে এই বইটি রিকমেন্ড করব।

Share.

রংপুরের অল্প সময়ে গড়ে ওঠা পপুলার অনলাইন পর্টাল রংপুর ডেইলী যেখানে আমরা আমাদের জীবনের সাথে বাস্তবঘনিষ্ট আপডেট সংবাদ সর্বদা পাবলিশ করি। সর্বদা আপডেট পেতে আমাদের পর্টালটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

Leave A Reply

mostplay app

4rabet app

leonbet app

pin up casino

mostbet app

Exit mobile version