৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে, দেরির কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস। রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুন প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনটি বাধা রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এসব কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে, দেরির কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস
৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে, দেরির কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. খনি উদ্দিন জানান, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন আর আগুন ছড়াবে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট কাজ করে। তবে পুরোপুরি নিভে যেতে আরও কিছু সময় লাগবে। প্রতিটি ভবন ও কক্ষে আগুন লেগেছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। মহাপরিচালক বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনটি বাধা রয়েছে। তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রধান বাধা ছিল উৎসুক জনতা। পানি ও বাতাসের অভাবেও আগুন নেভাতে দেরি হয়।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, উৎসুক জনতার কারণে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। ৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে, দেরির কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস নিজের বানানো একটি ভিডিও সাংবাদিকদের দেখিয়ে তিনি বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিসের কাজ কোন জায়গা থেকে করব। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কোথায় এবং কিভাবে কাজ করবে? আমরা আপনার জন্য আমাদের জীবন দিয়েছি।
আগুন নেভাতে পানির অভাবের বিষয়ে মহাপরিচালক মো. মাইন উদ্দিন তিনি বলেন, সেনাবাহিনী পানির বাউজার নিয়ে এসেছে এবং পানির সমস্যায় সহায়তা করছে। এবং ঘটনাস্থলে প্রচুর বাতাস ছিল। আগুন বাতাসে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়। এর ফলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বিলম্ব হয়েছে।
৪ বছর আগে ভবনটিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়
৪ বছর আগে ভবনটিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়
তিনি বলেন, তদন্তের আগে আগুনের উৎস সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। মাইন উদ্দিন বলেন, ‘২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে আমি এই ভবনটিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ব্যানার টেনেছিলাম। আমি 10 বার নোটিশ দিয়েছি, যা করতে হবে সব করেছি। তখনও ব্যবসা চলছিল।
এ বিষয়ে অবহেলা করলে অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। আগুন নেভানোর পর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে সাধারণ মানুষের হতাহত হওয়ার কোনো খবর নেই। মাইন উদ্দিন তিনি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিসের আটজন আহত হয়েছেন। দুজনকেই শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে হামলার বিষয়ে ড. মাইন উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তার দুই পাশে বঙ্গবাজার ও ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তর। সাড়ে ছটায় ঘটনাস্থলে পৌঁছলাম। ৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে, দেরির কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস ,ডিজি হিসেবে মানুষের জীবন বাঁচাতে জীবন দিয়ে যাচ্ছি। কেন কেউ ফায়ার সার্ভিসের অফিসে হামলা করল বুঝতে পারছি না। আমি গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণকে বলতে চাই, যেকোনো দুর্যোগে ফায়ার সার্ভিস সবার আগে পাশে দাঁড়ায়। কেন এই হামলা, আঘাত- এই প্রশ্নটা আপনাদের কাছেই ছেড়ে দিলাম।
মহাপরিচালক মোঃ মাইন উদ্দিন আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানুষের জন্য জীবন দিয়ে থাকেন। গত এক বছরে ১৩ জন শহীদ হয়ে অগ্নিবীর খেতাব পান। আহত হয়েছেন ২৯ জন। আর আজ আহত হয়েছেন আটজন।
অগ্নিকাণ্ডে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলতে পারবেন বলে জানান মহাপরিচালক। ফায়ার সার্ভিস ঘটনার সঠিক তদন্ত করবে বলে জানান তিনি।
প্রথমে এক ব্যক্তির মোবাইল ফোন নম্বর ও জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে আগুন লাগার খবর পেয়ে মো: খনি উদ্দিন জানান, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, ওয়াসা, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।