১৪০ পরীক্ষার্থীর ফল বিপর্যয়ের শঙ্কা, শিক্ষক বহিষ্কার

এসএসসি পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞান প্রশ্নপত্রের ২৫টি এমসিকিউ প্রশ্নের সব কটির উত্তর দিতে বাধ্য করায় এক শিক্ষককে পাঁচ বছরের জন্য পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে ওই শিক্ষককে পরীক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখে। বাগাতিপাড়া সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের মহিলা ডিগ্রি কলেজ ভেন্যুতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।এদিকে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুসারে, ১২টি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ২৫টির উত্তর দেওয়ায় ফলাফল বিপর্যয় হবে কি না, তা নিয়ে ১৪০ জন পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অবশ্য বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণক প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের ক্ষতি না হয় এমন সিদ্ধান্তই তাঁরা নেবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল ১০টায় বাগাতিপাড়া উপজেলার বাগাতিপাড়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসির পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের ১৮০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রশ্নপত্রে ২৫টি এমসিকিউ প্রশ্ন দেওয়া থাকে। এর মধ্যে কটির উত্তর দিতে হবে, তা উল্লেখ ছিল না। শ্রেণিশিক্ষকের পূর্বনির্দেশনা অনুসারে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত ১৫ মিনিটে ১২টি প্রশ্নের উত্তর দেয়। কিন্তু ওই কেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ২৫টি প্রশ্নেরই উত্তর দিতে বাধ্য করেন। পরীক্ষার্থীরা সময়ের ব্যাপারে আপত্তি করলে কিছু সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা অন্যসব কেন্দ্রে ১২টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে শুনে উত্তেজিত হয়ে ওঠে।

গুজব ছড়িয়ে পড়ে, ১২টির বেশি উত্তর দিলে ওই উত্তরপত্র বাতিল হবে। এতে পরীক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওই শিক্ষককে পরীক্ষাকেন্দ্রের একটি কক্ষে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখে। খবর পেয়ে ইউএনওর কয়েকজন প্রতিনিধি ওই কেন্দ্রে গিয়ে শিক্ষককে উদ্ধার করে উপজেলা পরিষদে নিয়ে যান। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরাও সেখানে জড়ো হন। বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডে লিখিতভাবে (ই-মেইল করে) জানানো হয়।এ ঘটনায় ইউএনও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তাৎক্ষণিক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে এক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেন। পরে তাঁর দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই ভেন্যুর দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক জয়নাল আবেদিনকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য সব ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করেন। এ ছাড়াও বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ইউএনওর কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের রোল নম্বরসহ চিঠি পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকি বিষয়টা বোর্ড বিবেচনা করবে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘অভিভাবকদের ফোনে বিষয়টি জেনেছি। পরীক্ষার্থীদের যেন ক্ষতি না হয় তা আমি দেখব।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষার আগে কেন্দ্রসচিবদের সঙ্গে সভা করে বারবার সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও এ ধরনের ভুল হলে কী করব!’

Leave a Comment