হে মুসলিম নারী! আপনাকে কেন পর্দা করতে হবে?

হে মুসলিম নারী! আপনাকে কেন পর্দা করতে হবে?

আল্লাহ তাআলা বলেন,

‘(হে নবি) ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হিফাযত করে।
যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া কোনো সৌন্দর্য যেন প্রদর্শন না করে। আর মাথার ‘খিমার’ (ওড়না) যেন ‘জাইব’-এর ওপর (বক্ষদেশে) ফেলে রাখে।’
[সূরা নূর, ২৪ : ৩১]

এই আয়াত নাযিলের পূর্বে নারীরা ”জাইব’ নামের একরকম পোশাক পরিধান করতো। চুল, ঘাড় ও বুকের কিয়দাংশ বেরিয়ে থাকতো এতে।

আল্লাহ এই আয়াত নাযিল করে এগুলো সব (চুল, ঘাড়, পুরো বুক) ‘খিমার’ তথা ওড়না দিয়ে ঢেকে ফেলার নির্দেশ দেন।

শাব্দিক অর্থে খিমার বলা হয়
মাথা ঢাকার কাপড়কে। এটা চেহারা ঢাকার নিকাব থেকে একটু আলাদা।

তো, আয়াতে মুসলিম নারীদের বলা হলো, তারা তাদের মাথা, ঘাড় ও বুক ঢেকে রাখবে।
আপাতত চেহারা ঢাকা বা না ঢাকার মতবিরোধে যাচ্ছি না।

তো, এই আয়াত নাযিলের পর মুসলিম নারীদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
আপনার কী মনে হয়?
তারা কি বলেছিলেন,
” ইয়া রাসূলাল্লাহ!
আবহাওয়া তো খুব গরম! বিশেষ করে মদীনার আবহাওয়ার যে অবস্থা…? ”

তারা কি বলেছিলেন,
‘ দর্জি আগে হিজাব তৈরি করে নিক! ততদিন অপেক্ষা করি…? ’

না।
আল্লাহর আদেশ তাদের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল, তা বুখারির হাদীসে দেখুন –
আয়িশা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) বলতেন,
‘এই আয়াত নাযিলের পর মুসলিম নারীরা (গায়ে থাকা) কাপড়ের পার্শ্ব ছিড়ে ঘোমটা দিতে শুরু করে…।’
(সুবহানাল্লাহ)

ধরুন, কোনো মহিলা তার বোনের ঘরে বা মায়ের কাছে বসে আছেন। কিংবা বাজারে কেনাকাটা করছেন। এমন সময় শুনলেন এই আয়াতটি। শোনা মাত্রই তিনি গায়ের লম্বা কাপড়ের পাশ থেকে ছিঁড়ে আল্লাহ তাআলা যা আবৃত করতে বলেছেন, তা আবৃত করে নিলেন!

কেন এরকম করলেন?
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার আনুগত্যের কারণে,
তাঁকে ভালোবেসে,
তাঁর প্রতিদানের প্রত্যাশায়,
তাঁর শাস্তিকে ভয় করে!

প্রিয় মুসলিম বোন আমার!
’’… যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া কোনো সৌন্দর্য যেন প্রদর্শন না করে। আর মাথার ওড়না যেন বক্ষদেশে ফেলে রাখে।
তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র… ব্যতীত কারেও কাছে সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।’
[সূরা নূর, ২৪ : ৩১]

এই আয়াত পড়ার সময় আপনার অনুভূতি কেমন হয়?
এখানে ১২ ধরনের আত্মীয়ের কথা বলা হয়েছে, যারা ব্যতীত অন্য কারও সাথে বিনা প্রয়োজনে ও পর্দা ছাড়া সাক্ষাৎ করা নিষিদ্ধ।

বোন,
আপনি কতবার এই আয়াত পড়লেন; রমাদানে, রমাদানের বাইরে…।
তারপরও কীভাবে আপনার প্রিয় খালিকের বিধানের বিপরীত করছেন, তার আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন?

যেন আপনি আল্লাহর কথার জবাব এভাবে দিচ্ছেন যে,
‘না, ইয়া রব, পারব না!
সৌন্দর্য ঢেকে রাখব কেন?
বাড়ির দারোয়ান থেকে শুরু করে ভার্সিটির ফ্রেন্ড, অফিসের কলিগ, দোকানদার, গাড়ির পাশের সিটের লোক, পথচারী-সবাই-সবাইকে দেখাব আমার রূপ-লাবণ্য।’
যেন আল্লাহর আদেশ আপনার কাছে গুরুত্বহীন ও ঐচ্ছিক!

এরপরও কি মনে করেন যে,
আপনি কুরআন দ্বারা প্রভাবিত হবেন?
আপনার ঈমান বৃদ্ধি পাবে?

আপনি তো কুরআনের মিষ্টতা আর ঈমানের স্বাদ নেয়াকে উপেক্ষা করে নিজের প্রবৃত্তির ডাকে সাড়া দিচ্ছো!

‘তোমরা কি উত্তম জিনিসের বিনিময়ে নিকৃষ্ট জিনিস চাও?’
[ সূরা বাকারাহ, ২ : ৬১]

প্রিয় বোন আমার!
দেখুন, আলোচ্য পর্দা বিষয়ক আয়াতের শেষ দিকে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা কী বলছেন।
দেখুন না!

আপনার রব আপনাকে ডাকছেন –
‘আর হে মুমিনগণ, তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে ফিরে এসো (তাওবা করো), তবেই সফলকাম হবে।’
[সূরা নূর, ২৪ : ৩১]

– ড. ইয়াদ কুনাইবি হাফিজাহুল্লাহ

লেখা সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

By মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

My name is Mahazabin Sharmin Priya, and I am an author who studied Mathematics at the National University. I have a deep passion for writing in various genres, including Islam, technology, and mathematics. With my knowledge and expertise, I strive to provide insightful and engaging content to readers in these areas.

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *